@1748523375975523_162
আছসালামু আ'লাইকুম
একটি হারানো সুন্নাহ।
পাঠকালভেদে তাকবীর প্রধানত দুই প্রকার। মুতলাক ও মুকায়্যিদ। মুতলাক তাকবীর জিলহজ্জ মাসের প্রথম দিন থেকে আইয়ামে তাশরীক শেষ হওয়া পর্যন্ত যেকোনো সময় পাঠ করা যায়। পুরুষরা উচ্চস্বরে পাঠ করবেন, নারীরা নিজেকে শুনিয়ে। মুকায়্যিদ তাকবীর আরাফার দিন বা ৯ জিলহজ্জের ফজর বাদ থেকে ১৩ই জিলহজ্জের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর পাঠ করতে হবে। এটা নারীপুরুষ, মুক্তাদী-মুনফারিদ সবার জন্য বাধ্যতামূলক।
আল্লাহু আকবার,আল্লাহু আকবার,আল্লাহু আকবার,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু,ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হা'মদ।
আমরা মুকায়্যিদ তাকবীরের ওপর আমল করি মোটামুটি। তবে মুতলাক তাকবীর যে আছে, এটা অনেকেই জানিই না। অথচ সাহাবারা মুতলাক তাকবীর প্রাণভরে উচ্চস্বরে পাঠ করতেন। তাকবীরের প্রতিধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠত চারদিক। এক অন্যরকম উপলক্ষ তৈরি হত।
উমর রাদিআল্লাহু আনহু ঘরে বসে জোরেশোরে তাকবীর পাঠ করতেন। সেই আওয়াজ মসজিদে পৌঁছুলে অপেক্ষারত মুসল্লীরাও সমবেত কণ্ঠে তাকবীর দিতেন। তাঁদের আওয়াজ শুনে পথচারীরাও তাকবীর দেওয়া শুরু করতেন। পথচারীদের তাকবীর শুনে বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারাও তাকবীর ধ্বনি তুলতেন। তাকবীরে-তাকবীরে কেঁপে উঠত জমিন। মধুময় তাকবীর তরঙ্গে মেতে উঠতেন নারীপুরুষ সবাই।
উমর রাদিআল্লাহু হাঁটতে, বসতে, শুইতে, বৈঠকে উচ্চস্বরে তাকবীর পাঠ করতেন। তাঁর তাকবীর পাঠ শুনে অন্যান্যরাও কণ্ঠ মেলাতেন। সব কণ্ঠের জোরে সৃষ্টি হত অনাবিল সুখময় মুহূর্ত।
ইবনে উমর এবং আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহুমা মিলে রাস্তা ধরে হাঁটতেন আর তাকবীর ধ্বনি তুলতেন। তাকবীর দিতে দিতে বাজার পর্যন্ত চলে যেতেন। তাঁদের তাকবীর শুনে বাজারের সবাই তাকবীর পাঠ করতেন।
(আইয়ামুল ফাদিলাহ: আশারু যিল হাজ্জাহ, পৃ: ৭-৮)
এই হারানো সুন্নাহ ফিরিয়ে আনা উচিত। দুইজন রিকশায় করে কোথাও যাচ্ছেন! একসাথে তাকবীর দিন। মানুষ শুনুক, বুঝুক, ভাবুক। মুনাফিক-ঈমানহীনদের গায়ে আগুন জ্বলুক। দিয়াশলাই কাঠি ঘষেই শুধু আগুন জ্বলানো হয় না; তাকবীর দিয়েও জ্বালানো যায়।
চার বন্ধু কোথাও ঘুরতে বের হলেন। উচ্চস্বরে অর্থহীন কথা না বলে মাঝেমধ্যে তাকবীর আওয়াজ তুলুন। একটা আবহ সৃষ্টি করুন।
মসজিদে যাচ্ছেন? সারাজীবন তো চুপিচুপিই গেলেন। এবার একটু মুখ খুলুন। গলা ছেড়ে তাকবীর পাঠ করুন। মসজিদের আঙিনায় তাকবীর দিতে সঙ্কোচবোধ কেন করবেন?
তাকবীর ধ্বনি মুমিনের ঘুমন্ত রক্তকে হেঁচকা টান দিয়ে জাগিয়ে দেয়। যাদের অন্তরে রয়েছে বক্রতা তাদের বুকে দেয় অন্তহীন অনল। তাকবীর বাতাসে মিশে মুমিনের জন্য তৈরি করে স্ট্যামিনা, দিকভ্রান্তদের জন্য সরবরাহ করে বিষ। সুতরাং চুপ না থেকে তাকবীর দিন। হারিয়ে যাওয়া সুন্নাহ আবার ফিরিয়ে আনুন। প্রাণবন্ত হোন।
(Sopno Pori)
Tuhin Tazwer
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?
Mamon Prodhan
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?