ছয় বছর আগে আমি অনেক ডিপ্রেসড (বিষণ্ন) ছিলাম। আমার অ্যাংজাইটি (উদ্বেগ), ডিপ্রেশন (বিষণ্নতা) ধরা পড়েছিল। চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতার জন্যই গানটা করেছি। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা খুবই কম দেখা যায়। কিছু কিছু কাজ থাকে, ডেডলাইনের (নির্দিষ্ট সময়) মধ্যে করতে হবে—এটা ওই রকম কাজ নয়। ভালো লাগার জায়গা থেকে গানটা করেছি। গত বছরের ডিসেম্বরে অডিও বানানো শুরু করেছিলাম। অডিও বানাতেই তিন মাস লেগে গেল। এরপর ভিডিওটার কাজ শুরু করি। মাস তিনেক আগে ভিডিওটা বানানো শেষ হয়ে গেছে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে ট্যুরে চলে যাই।
উদ্বেগ, বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আপনার কোনো বার্তা আছে?
তাঁদের প্রতি একটাই বার্তা, হাই প্রেশার (উচ্চ রক্তচাপ), ডায়াবেটিসের মতো এটিও একটি রোগ। এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অনেকে ডাক্তার দেখাতে ভয় পান। চিকিৎসার সঙ্গে ব্যায়াম ও ইয়োগা (যোগব্যায়াম) করলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যায়। আশা করি, যাঁরা অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশনে ভুগছেন, তাঁরা অবশ্যই ওভারকাম (জয়) করবেন।
আপনি কীভাবে উদ্বেগ, বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পেলেন?
আমি ডিপ্রেশনে (বিষণ্নতা) আক্রান্ত হই ছয় বছর আগে। তারপরই আমার মা মারা যায়। তখন ডিপ্রেশনটা আরও বেড়ে যায়। মাকে হারানোটা আমার জন্য অত্যন্ত কষ্টের ছিল। আমি ডাক্তার দেখাই, কাউন্সেলিং করি। পাশাপাশি ব্যায়াম, ইয়োগা, মেডিটেশন (ধ্যান) করি। তখন আমার কোনো বন্ধু ছিল না, কঠিন সময় পার করেছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওভারকাম করে ফেলি। আমি খুবই খুশি, ওটা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি।
বাংলাদেশের জীবনটা কেমন কাটছে?
এখন ভালো কাটছে। আমি মানসিক ও শারীরিকভাবে হেলদি। ভালো আছি।
‘পালাবে কোথায়’ গানে ফিরি, গানটাতে পশ্চিমা মিউজিকের সঙ্গে আমাদের মিউজিকের মেলবন্ধন পাওয়া গেছে। কোন ভাবনা থেকে এটা করলেন?
এখন ইলেকট্রনিক মিউজিকটা খুবই জনপ্রিয়। বিশেষ করে জেন-জিরা ইলেকট্রনিক মিউজিকটা খুব বেশি পছন্দ করে এবং শোনে। আমিও ইলেকট্রনিক মিউজিক পছন্দ করি। ইলেকট্রনিক মিউজিকের প্রতি ঝোঁক অনেক আগে থেকেই ছিল। চাইছিলাম পপের সঙ্গে ইলেকট্রনিক মিউজিকের মেলবন্ধনটা করতে। তারপর এই মিউজিক ও সাউন্ডের আইডিয়াটা আসে। পরে গানটা করলাম।

গান বানানোর সময় আলাদা করে জেন-জি শ্রোতাদের কথা মাথায় রাখেন?
এটা সব সময় আমার মাথায় থাকে। জেন-জিদের খুবই পছন্দ করি। ওদের ক্রিয়েটিভিটি (সৃষ্টিশীলতা), ওদের মিউজিক আমার অনেক পছন্দ। প্রতিটি প্রজন্মেরই কিছু খারাপ আছে, কিছু ভালো আছে। আমি ভালোটা নেওয়ার চেষ্টা করি। গান করার সময় ওদের কথা আলাদাভাবে মাথায় থাকে। রবীন্দ্রসংগীতও যদি করি, সেটা এমনভাবে করি যেন জেন-জিরাও শোনে। গানটা যেন মনোটোনাস (একঘেয়ে) না হয়ে যায়। নতুন কিছু যেন করা যায়। ওরাই আমাদের ফিউচার।
অর্ণবের সঙ্গে একটা অ্যালবাম করছিলেন, কবে মুক্তি পাবে?
অ্যালবাম রেডি করা আছে, চার বছর ধরে অ্যালবামটা বানাচ্ছি। অ্যালবামটা রবীন্দ্রসংগীতের। বাইরের দেশগুলোতে গান প্রকাশের জন্য এজেন্সি আছে। বাংলাদেশে তেমন কোনো এজেন্সি নেই। বাইরের শিল্পীদের শুধু গান বানাতে হয়, তাঁদের এজেন্সি সেটা বের করে দেয়। আমাদের তো সবকিছু নিজে করতে হয়। চেষ্টা করছি অ্যালবামটা জলদি বের করার।
যুক্তরাষ্ট্র ট্যুর কেমন হলো?
ট্যুরটা ভালো ছিল। টানা দুই মাসে ১০ থেকে ১২টার মতো শো করেছি। আজ ওয়াশিংটন ডিসি তো পরদিন নিউইয়র্ক; দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে। তবে অভিজ্ঞতাটা খুবই ভালো ছিল।