ঢাকা আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন মোড়

Bình luận · 13 Lượt xem

দীর্ঘ ১৫ বছরের স্থবিরতা কাটিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেতে যাচ্ছে। পাকিস্ত

দীর্ঘ ১৫ বছরের স্থবিরতা কাটিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেতে যাচ্ছে। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকা সফরে আসছেন। এই সফরে একাধিক চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে এই সফরের মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার বার্তা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

সরকারের একজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, গত এপ্রিল মাসে স্থগিত হওয়া সফরটি এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উভয়পক্ষই এই সফরে সম্মতি দিয়েছে এবং ২২ বা ২৩ আগস্টে ইসহাক দারের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল ইসহাক দারের ঢাকা আসার কথা ছিল, কিন্তু ভারতের পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় তার সফর স্থগিত করা হয়। বর্তমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ঢাকা সফরের আগ্রহ বেড়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ঢাকা-ইসলামাবাদের সম্পর্কে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। ইসহাক দারের ঢাকা সফরের পর পাকিস্তান দুই দেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক ইসলামাবাদে আয়োজন করতে চাইছে। দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ (অষ্টম) জেইসি বৈঠক ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দুইবার সাক্ষাৎ হয়েছে— প্রথমে নিউইয়র্কে এবং পরে মিশরে। প্রথম সাক্ষাতে একাত্তরের প্রসঙ্গ না তোলায় সমালোচনা হলেও, মিশরে ড. ইউনূস পাকিস্তানকে একাত্তরের জন্য ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন।

ঢাকা সফরে ইসহাক দারের মূল বৈঠক হবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে। এছাড়া, তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সম্প্রতি নিউইয়র্কে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ইসহাক দারের সাক্ষাৎ হয়, যেখানে ঢাকা সফর নিয়ে আলোচনা হয়। ওই সাক্ষাতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য ভিসা সহজীকরণ এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেন।

আসন্ন সফরে কয়েকটি চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, সফরের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন, তবে এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না কয়টি চুক্তি হবে। ঢাকা সফরের সময় ইসহাক দার বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারেন বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো আভাস দিয়েছে।

যদিও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বাংলাদেশ আন্তরিক, তবুও ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া, যুদ্ধক্ষতিপূরণ, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন এবং সম্পদের হিস্যার মতো অমীমাংসিত ইস্যুগুলো ঢাকার পক্ষ থেকে তোলা হতে পারে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বারবার বলেছেন, একাত্তর বাদ দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো চেষ্টা করা হচ্ছে না। তিনি মনে করেন, পাকিস্তান আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইলে এটি সম্পর্ক আরও ভালো করার সুযোগ তৈরি করবে।

আসন্ন ঢাকা-ইসলামাবাদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের অগ্রাধিকারের বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এখনো আলোচ্যসূচি ঠিক হয়নি। আশা করছি, আগস্টের শুরুতে তা চূড়ান্ত করা হবে।’

বিগত বছরগুলোতে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের সফর সীমিত ছিল। ২০১২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ঢাকায় এসেছিলেন। এরপর থেকে মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো সফর হয়নি।

Bình luận