ফুটবল মানে শুধু মাঠের লড়াই বা ট্রফি জয়ের গল্প নয়। মাঠের বাইরেও আছে এমন সব সম্পর্ক, বিশ্বাসঘাতকতা আর ঈর্ষার গল্প, যা ভক্তদের মধ্যে বড় আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তারকা ফুটবলারদের স্ত্রী ও প্রেমিকাদের নিয়ে এমন কিছু কেলেঙ্কারি বিভিন্ন সময়ে নাড়িয়ে দিয়েছে ফুটবল বিশ্বকেই।
সবচেয়ে আলোচিত নামটা ওয়ান্দা নারা। আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার মাউরো ইকার্দির সঙ্গে নারার সম্পর্ক যখন শুরু হয়, তখন তিনি আরেক আর্জেন্টাইন ফুটবলার ম্যাক্সি লোপেজের স্ত্রী। আর ইকার্দি–লোপেজ ছিলেন ইতালিয়ান ক্লাব সাম্পদোরিয়ায় বন্ধুপ্রতিম সতীর্থ।
ইকার্দির সঙ্গে নারার পরকীয়ার সম্পর্ক প্রকাশ্যে এলে জন্ম নেয় এক ‘কুখ্যাত’ ত্রিভুজ প্রেমের গল্প। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে লোপেজকে ডিভোর্স দেন নারা। এর ছয় মাস পরেই ইকার্দিকে বিয়ে করেন। এরপরও লম্বা সময় ইতালির বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছেন ইকার্দি ও লোপেজ। সিরি ‘আ’–তে দুইজনের দলের লড়াইকে ইতালির ফুটবলপ্রেমীরা নাম দিয়েছিলেন ‘ওয়ান্দা ডার্বি’।

ওয়ান্দা নারার সঙ্গেও সংসার টেকেনি ইকার্দির। গত বছরের জুলাইয়ে ইকার্দির সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন আর্জেন্টাইন মডেল ও টিভি উপস্থাপিকা নারা। এরপর এ বছরের শুরুতে নতুন প্রেমিকা চায়না সুয়ারেজকে সামনে নিয়ে আসেন ইকার্দি।
সম্প্রতি ইকার্দি চোট কাটিয়ে খেলায় ফেরার পর চায়না সুয়ারেজ ওয়ান্দা নারাকে ইঙ্গিত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি মন্তব্য করেন, যা এই প্রেম–দ্বৈরথকে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে।
ইংল্যান্ডের ফুটবলেও বড় ধরনের কেলেঙ্কারি হয়েছে। একসময় ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন কোলিন রুনি আর রেবেকা ভার্ডি। দুজনের পদবী শুনেই তাঁদের পরিচয় বুঝে ফেলার কথা। কোলিন আর রেবেকা ইংল্যান্ডের সাবেক দুই ফরোয়ার্ড ওয়েইন রুনি ও জেমি ভার্ডির স্ত্রী।

তবে কোলিন ও রেবেকার বন্ধুত্ব এখন শত্রুতায় রূপ নিয়েছে। কোলিনের অভিযোগ, রেবেকা তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করেছেন। সেই ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ায়, যা ‘ওয়াগাথা ক্রিস্টি’ নামে পরিচিত এবং ফুটবলের খবর ছাপিয়ে ইংল্যান্ডের জাতীয় আলোচনায় উঠে আসে।
জন টেরির ঘটনাও ইংলিশ ফুটবলকে কম নাড়া দেয়নি। ২০১০ সালে টেরির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি তাঁর ক্লাব চেলসি ও ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সতীর্থ ওয়েইন ব্রিজের সাবেক প্রেমিকা ভানেসা পেরোনসেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। অথচ টেরি তখন বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগে একটি ম্যাচে টেরির সঙ্গে করমর্দন করতে অস্বীকৃতি জানান ব্রিজ। সেই দৃশ্য ফুটবল ইতিহাসে প্রেম-দ্বৈরথের আরেকটি প্রতীকী মুহূর্ত হয়ে আছে।
বার্সেলোনা ও স্প্যানিশ কিংবদন্তি জেরার্দ পিকেও কম যান না। পিকের সঙ্গে কলম্বিয়ার বিখ্যাত গায়িকা শাকিরার বিচ্ছেদের খবর এক সময় বিশ্বজুড়ে খবরের শিরোনাম হয়। দুজনের সম্পর্ক এতটাই তলানিতে গিয়ে ঠেকে যে, শাকিরা তাঁর গানে পিকেকে উদ্দেশ্য করে তির্যক মন্তব্য করতে থাকেন।

যে নারীর কারণে শাকিরাকে পিকে ছেড়ে দেন, তাঁর নাম ক্লারা চিয়া মার্তি। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে নতুন এই প্রেমিকার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই ডিফেন্ডার।
পিকে-শাকিরার দ্বন্দ্বের বড় ঝড়টা গেছে ক্লারার ওপর দিয়েই। শাকিরার গানের কথাগুলো নাকি নিতেই পারেননি এই তরুণী। মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে নিজেকে কিছু দিন বাপের বাড়িতে বন্দী করে রেখেছিলেন ক্লারা।
সম্প্রতি বার্সেলোনার দুই ফুটবলার গাভি ও ফেরমিন লোপেজ প্রেমিকাদের কারণে আলোচনায় এসেছেন। ইতালিয়ান ক্রীড়া দৈনিক কোরিয়েরে দেল্লো স্পোর্ত কদিন আগে জানায়, প্রেমিকা-ইস্যুতে হরিহর আত্মা এই দুই বন্ধুর সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। বার্সার ড্রেসিংরুমেও গাভি ও লোপেজ নাকি মুখোমুখি অবস্থানে। একে-অন্যের সঙ্গে মেশেন না। গত ৫ আগস্ট নিজের ২১তম জন্মদিন পালন করা গাভি লোপেজের কাছ থেকে শুভেচ্ছাবার্তাও পাননি।

গাভির প্রেমিকার নাম আনা পেলাইয়ো। আর লোপেজের প্রেমিকার নাম বের্তা গায়ার্দো। কোরিয়েরে দেল্লো স্পোর্তের খবরে বলা হয়, পেলাইয়ো ও গায়ার্দোর মধ্যে সম্পর্ক ভালো নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের মধ্যে কথার লড়াইও হয়েছে। আর এই ব্যাপারটাই ফাটল ধরিয়েছে গাভির-লোপেজের বন্ধুত্বে।