কমিশন অবশ্য সেটা নাকচ করছে।
কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, জুলাই সনদে যেসব প্রস্তাব আছে তার মধ্যে অনেককিছুই সংবিধান সম্পর্কিত। এগুলোর "অনেকগুলোতেই সব দল একমত হয়েছে"।
কমিশন প্রস্তাব করেছে এগুলোকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে।"এখন সেগুলোকে যদি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলা হয় তাতে করে এটা সংবিধানের ঊর্ধ্বে উঠে যায় না," বলেন আলী রীয়াজ।কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সংবিধান বিশেষজ্ঞ এমনকি দেশের অন্যতম প্রধান একটি রাজনৈতিক দল বিএনপিও এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
একইসঙ্গে প্রশ্ন আসছে, জুলাই সনদকে আইনের ঊর্ধ্বে রাখার কথা কেন বলা হচ্ছে?জুলাই সনদের খসড়ায় সংবিধান, রাষ্ট্রসংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ই অন্তর্ভূক্ত আছে।
এরমধ্যে কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। আবার কিছু বিষয়ে বিভক্তি নিয়েই প্রাথমিক খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে।
কিন্তু খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে নতুন দুটি বিষয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই বিষয়গুলো মূলত জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় প্রস্তাব করা হয়েছে।
অঙ্গীকারনামার দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছে, "এই সনদের সকল বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্তকরণ নিশ্চিত করবো এবং বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনও আইনে ভিন্নতর কিছু থাকলে সেই ক্ষেত্রে এই সনদের বিধান/প্রস্তাব/সুপারিশ প্রাধান্য পাবে"।
এটাকে অনেকে ব্যাখ্যা করছেন জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য দেওয়া হিসেবে।
আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, অঙ্গীকারনামার চতুর্থ দফা যেখানে বলা হয়েছে, 'জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫'-এর প্রতিটি বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশ সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে বলবৎ হিসেবে গণ্য হবে বিধায় এর বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা, কিংবা জারির কর্তৃত্ব সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না।
এটাকে অনেকেই বলছেন, সংবিধানে নাগরিকদের দেওয়া মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে।
কিন্তু জুলাই সনদ নিয়ে বৈধতার প্রশ্ন তোলা যাবে না এমনটা কেন বলছে ঐকমত্য কমিশন?
জানতে চাইলে কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, জুলাই সনদের 'সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে' এমনটা বলা হয়েছে।
"কারণ সাংবিধানিকভাবে যদি আমি স্বীকৃতি না দেই তাহলে যেটা দাঁড়াবে যে ভবিষ্যতে এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে যে, এর বৈধতা কোথায়?"
"এখন এর বৈধতা তো অর্জিত হয়েছে রক্ত দিয়ে, প্রাণ দিয়ে। তো তাকে নিয়ে যদি আগামীকাল কেউ প্রশ্ন তুলতে যান, তাহলে সেই প্রশ্ন তো বন্ধ করতে হবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে এই মানুষগুলোর প্রাণ, তাদের আত্মদানকে যেন কেউ কোনোদিন প্রশ্ন তুলতে না পারে," বলেন তিনি।