চার কারণে কমছে বিদেশি বিনিয়োগ

Mga komento · 47 Mga view

দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যবসায়িক পরিবেশের অবনতি এবং উচ্চ সুদ ও করহারের কারণে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই

  n  দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যবসায়িক পরিবেশের অবনতি এবং উচ্চ সুদ ও করহারের কারণে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) ক্রমেই কমছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাংলাদেশে এসেছে মাত্র ৯১ কোটি ডলার সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ কোটি ডলার কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই (জুলাই-ডিসেম্বর) যেখানে এফডিআই এসেছিল ৩৩ কোটি ডলার, সেখানে এবার তা নেমে এসেছে ২১ কোটি ডলারে। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের মতে বিনিয়োগের এ ধারা অব্যাহত থাকলে শিল্পোৎপাদন, কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘কেউ বলতে পারবেন গত আট মাসে কোনো চীনা গার্মেন্টস বাংলাদেশে এসেছে? স্পিনিং মিল করেছে? আমাদের সঙ্গে পার্টনার হয়েছে? কেউ এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ করতে চায় না, যেখানে গ্যাস নাই, বিদ্যুৎ নাই আর ব্যবসা করার খরচ দিনদিন বাড়ছে।’ এ বাস্তবতার সঙ্গে একমত অর্থনীতিবিদরাও। তাঁদের মতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের ঘাটতি, অর্থনীতির নীতিগত অস্থিরতা-সব মিলিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারাচ্ছেন।

জানতে চাইলে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ঘাটতিসহ নানান কারণে ব্যবসায়ীরা অনিশ্চয়তায় ছিলেন। এর ফলে ব্যবসার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়েছে। যদিও পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও নতুন বিনিয়োগে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি, দেশি বা বিদেশি দুই ক্ষেত্রেই।’

পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ মনে করেন, পলিটিক্যাল আনসার্টেইনটি ফেব্রুয়ারি থেকেই বাড়ছে। এর প্রভাব সরাসরি বিনিয়োগের ওপর পড়েছে। এক্সচেঞ্জ রেটে স্থিতিশীলতা কিছুটা ফিরে এলেও মূল্যস্ফীতির দিক দিয়ে এখনো ইতিবাচক অগ্রগতি নেই। বিদেশি বিনিয়োগ না আসার ফলে শিল্প খাতে উৎপাদন কমেছে এবং বাড়ছে বেকারত্ব, যা দেশের যুবসমাজ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদি হুমকি তৈরি করছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুন বিনিয়োগ না হলে উৎপাদন বাড়বে না, কর্মসংস্থানও বাড়বে না এটাই বাস্তবতা। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা, করহার ও সুদহার যৌক্তিক মাত্রায় আনা, জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করে শিল্পোৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো, অবকাঠামো ও নীতিসহায়ক ব্যবস্থার সংস্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগ একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি আস্থার সংকটে ভুগছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নিরপেক্ষ অর্থনৈতিক নীতি ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ছাড়া এ সংকট কাটানো সম্ভব নয়। এখনই সময় বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের। অন্যথায় শিল্প ও শ্রম উভয় খাতেই দীর্ঘমেয়াদি ধস অনিবার্য।

Mga komento