একটি হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হচ্ছে কি?

Reacties · 42 Uitzichten

একটি বিবেকবান রাজনৈতিক দল হিসেবে সাম্প্রতিককালে রাজধানী ঢাকার চকবাজারে সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ জাতীয়ত??

একটি বিবেকবান রাজনৈতিক দল হিসেবে সাম্প্রতিককালে রাজধানী ঢাকার চকবাজারে সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি তীব্র প্রতিবাদ ও দৃষ্টামূলক শাস্তি দাবি করছে। এই ঘটনার সাথে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলার আলোকে আজীবন বহিষ্কারের মতো সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বর্তমান সরকারের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য দাবি জানিয়েছে।

বিএনপি মনে করে, যেকোনো অপরাধী- আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী, কোনো অপরাধীর দলীয় কোনো পরিচয় নেই। তার দলীয় পরিচয় অপ্রয়োজনীয় এবং তার অপরাধের সাথে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।

তবে আমাদের বেশ-কয়েকটি বিষয় গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য রাখা দরকার :

(০১) এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার হচ্ছে কিনা? 

(০২) জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করার জন্য এই ঘটনাটিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা?

(০৩) দেশের অন্য স্থানে সংগঠিত, যেমন- কুমিল্লায় মসজিদের ইমাম হত্যা, খুলনায় হত্যা ও রগকাটা; এমন হত্যাকাণ্ডের বিপরীতে আমাদের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর সমমানের কিনা? নাকি পক্ষপাতদুষ্টু?

(০৪) প্রকাশ্য দিবালোকে অসংখ্য মানুষের সামনে, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নিকটবর্তী অবস্থান থাকা সত্ত্বেও এইরূপ ঘটনার কোনো প্রতিরোধ না হওয়া কোনো প্রশ্নের উদ্রেক করে কিনা?

(০৫) জনসম্মুখে এই রূপ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ ছাড়া বিনা বাধায় ভিডিও ধারণ কোনো ষড়যন্ত্রের বার্তা বহন করে কিনা?

(০৬) মাত্র গুটিকয়েক সন্ত্রাসী দ্বারা প্রকাশ্যে এমন হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ায়- এক বছর আগে সংগঠিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্পূর্ণ বিপরীতে পুনরায় আইনের শাসন ধ্বংসের ষড়যন্ত্র কিনা?

(০৭) সরকার পরিচালনার দায়িত্বে না থাকা সত্ত্বেও কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতাকে দায়ী করে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন জাতীয় নির্বাচনের জনআকাক্সক্ষাকে নস্যাৎ করার পরিকল্পনা কিনা?

(০৮) দেশে সুস্থধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার দৃঢ়তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচারের মাধ্যমে আবারো ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কণ্ঠস্বররের প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছি কিনা? 

(০৯) শেষকথা, অপরাধীর জন্য কোনো অনুকম্পার সুযোগ নেই। পক্ষ অবলম্বনের প্রশ্নই উঠে না। এই রূপ অনমনীয় দৃঢ় পদক্ষেপকে স্বাগত না জানিয়ে পরিকল্পিতভাবে চরিত্র হনন; দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কিনা?

(১০) ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের আইনী সহায়তা প্রদানের অঙ্গীকার থেকে আমাদের বিরত হবার সুযোগ নেই। সেটা সোহাগ আমাদের দলীয় কর্মী বলে নয় বরং দেশের একজন নাগরিক যিনি সন্ত্রাসের নির্মম শিকার।

হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত কার্যকর করার বিষয়ে দলীয় অবস্থান সুদৃঢ় এবং অপরিবর্তিত। কিন্তু এটা নিয়ে যারা রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট এবং জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্থ ও অনিশ্চিত করতে চান এবং প্রকারন্তে ফ্যাসিবাদ উত্থানের পথ কারা সৃষ্টি করতে চান, তাদেরকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন।

শতবাধা অতিক্রম করে জনগণকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের মালিকানা বাংলাদেশের মানুষের কাছে ফেরত দেওয়াই একমাত্র অগ্রাধিকার। বিগত ১৭ বছরের দীর্ঘ সংগ্রামে অর্জিত সফলতা ব্যর্থ করার সুযোগ নেই।

সামান্য কিছু রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রকারীর অপচেষ্টায় বাংলাদেশ ব্যর্থ হতে পারে না। যে তারুণ্য ফ্যাসিবাদের পতনে অগ্রসৈনিক ছিল, আজকে দেশের প্রয়োজনে তাদের সাথে আমাদের সকলকের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে। ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র কোনো বাধা হতে পারেনা।

Reacties