ফাঁকাই থেকে যাবে কলেজগুলোর ১৩ লাখ আসন

Kommentarer · 47 Visninger

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা উত্তীর্ণ ১৩ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা জীবন শুরু করতে যাচ্ছে। তাদ?

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা উত্তীর্ণ ১৩ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা জীবন শুরু করতে যাচ্ছে। তাদের সবাই কলেজে ভর্তি হয়ে গেলেও ১৩ লাখের মত আসন ফাঁকাই থেকে যাবে।

আগামী ৩০ জুলাই থেকে কলেজে ভর্তির আবেদন শুরু হতে পারে। আর আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে একাদশ শ্রেণির ক্লাস।

বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ২৬ লাখ ৫৮ হাজার বেশি আসন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. রিয়াজুল হক।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কলেজগুলোতে ২৩ লাখের বেশি আর মাদ্রাসায় ৩ লাখের বেশি আসন আছে উচ্চমাধ্যমিকে।

অর্থাৎ, চলতি বছর এসএসসি পাস করা ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জনের সবাই কলেজে ভর্তি হয়ে গেলেও ১৩ লাখের মত আসন ফাঁকা থেকে যাবে।

বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য নীতিমালার খসড়া প্রস্তুত করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। ওই নীতিমালায় ৩০ জুলাই থেকে আবেদন গ্রহণ ও ১ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস শুরুর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এ নীতিমালা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

রোববার রাত পর্যন্ত ওই নীতিমালা চূড়ান্ত করতে সভার তারিখ নির্ধারণ হয়নি বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. রিয়াজুল হক।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা বিভিন্ন বোর্ডের কলেজ পরিদর্শকরা বসে নীতিমালার একটি খসড়া চূড়ান্ত করেছি। মন্ত্রণালয়ের সভা আয়োজন করে ওই নীতিমালা চূড়ান্ত হবে। তবে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করার সভার দিন-তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি।”

দিনাজপুর বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু সায়েম রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খসড়ায় আমরা ৩০ জুলাই থেকে কলেজে ভর্তির আবেদন শুরুর প্রস্তাব করেছি। আর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস শুরু করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”

অন্যান্য বছরের মত এবারও শিক্ষার্থীদের এসএসসিতে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় মেধাক্রম নির্ধারণ করে একাদশে ভর্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।

এবারের নীতিমালাটির খসড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গতবারের আঙ্গিকে করা হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. রিয়াজুল হক।

কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. নূরুন্নবী আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গতবছর তিন ধাপে আবেদন নেওয়ার কথা নীতিমালায় বলা থাকলেও চার ধাপে আবেদন নেওয়া হয়েছিল। এবারের নীতিমালায় খসড়ায় তাই চার ধাপে আবেদনগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

জুলাই অভ্যুত্থানে হাতহতদের স্বজনের জন্য থাকতে পারে বিশেষ সুবিধা

স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির মত কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রেও জুলাই অভ্যুত্থানে হাতহতদের স্বজনদের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখার সম্ভাবনা আছে, তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে অভ্যুত্থানের হতাহতের স্বজনরা প্রতি শ্রেণিতে একটি আসন বরাদ্দ পেয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বিষয় পছন্দে অগ্রাধিকার পেয়েছিলেন। কলেজের ভর্তির ক্ষেত্রে তারা কি সুবিধা পাবেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. রিয়াজুল হক বলেন, “ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা কী হবে, সে অংশ আমরা লিখেছি ‘আলোচনা সাপেক্ষে’; অর্থাৎ মন্ত্রণালয়ে সভা করে কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।

“সরকার যদি জুলাই অভ্যুত্থানে হাতহতদের স্বজনদের ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ সুবিধা দিতে চায়, তাহলে আলোচনা করে সেটি অন্তর্ভুক্ত হবে। আর বর্তমান যে কোটা বিন্যাস আছে, সেটাও মন্ত্রণালয়ে সবাই আলোচনা করে পুনর্নিধারণ করতে পারবে। নীতিমালাটি চূড়ান্ত হওয়ার আগে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না।”

দিনাজপুর বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু সায়েম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটার বিষয়টি আমার মন্ত্রণালয়ের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। মন্ত্রণালয় যদি মনে করে তারা অভ্যুত্থানে হাতহতদের স্বজনদের জন্য বিশেষ সুবিধা বা আসন সংরক্ষণ করতে পারে।”

স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে অভ্যুত্থানে হাতহতদের স্বজনরা সুবিধা পেয়েছিলেন, তাই কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রেও তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে বলে মনে করছেন এ কর্মকর্তা।

গত ১০ জুলাই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ, যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এর আগে ২০০৯ সালে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড়ে ৬৭ দশমিক ৪১ শতাংশ পাস করেছিল। এর আগে এই সময়ের মধ্যে ২০১৮ সালে পাসের হার ছিল সবচেয়ে কম, ৭৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

চলতি বছর স্কুলের গণ্ডি পেরোনো শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে, যা পাস করা মোট শিক্ষার্থীর ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

গত বছরে তুলনার এবার গড় পাসের হার কমেছে ১৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৪৩ হাজার ৯৭ জন।

গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।

দেশে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের মোট ৭,৫৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসন রয়েছে ২৬ লাখ ৫৮ হাজার ৭৩১টি। এর মধ্যে ৪,৮৭০টি কলেজ, বাকি ২,৬৮৫টি মাদ্রাসা।

গত বছর ১৬ লাখ ৭২ হাজার পরীক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানে উত্তীর্ণ হলেও তাদের মধ্যে ১৩ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলেন। তাদের সবাই একদশে ভর্তি হওয়ার পরও কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোতে ১৩ লাখের বেশি আসন ফাঁকা থেকে যায়।

Kommentarer