বাংলাদেশের কোন ১০ খেলোয়াড়ের সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুসারী সবচেয়ে বেশি

Comments · 1 Views

প্রিয় খেলোয়াড় পেশাদার জগতের বাইরে কোথায় কী করেন, কীভাবে জীবনযাপন করেন—এ নিয়ে ভক্ত-সমর্থকদের কৌতূহলের যেন শেষ

প্রিয় খেলোয়াড় পেশাদার জগতের বাইরে কোথায় কী করেন, কীভাবে জীবনযাপন করেন—এ নিয়ে ভক্ত-সমর্থকদের কৌতূহলের যেন শেষ নেই। বর্তমান সময়ে তারকা খেলোয়াড়দের ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার বড় মাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রামের মতো মাধ্যমে অনুসারী দেখে অনেক সময় একজন খেলোয়াড়ের জনপ্রিয়তা, তাঁকে ঘিরে মানুষের আগ্রহ বোঝা যায়। ধারণা পাওয়া যায় সেই খেলোয়াড়ের ‘ফ্যানবেজ’ সম্পর্কেও। তারকা খেলোয়াড়েরাও ভক্ত-অনুসারীদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেই বেছে নেন সবচেয়ে বেশি।

বিদেশি খেলোয়াড়দের মতো বাংলাদেশের তারকা খেলোয়াড়দের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয়। অনুসরণ করা যায়—এমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এক্স ব্যবহারকারীর সংখ্যাই বেশি। এই তিন প্ল্যাটফর্মে অনুসারী সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে শীর্ষ ১০ বাংলাদেশি ক্রীড়াবিদ যদি বেছে নেওয়া হয়, তাহলে কেমন হবে তালিকাটা?

অনুমিতভাবে সবার ওপরে আছেন সাকিব আল হাসান। একসময়ের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশান্তরি। আর কখনো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াতে পারবেন কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। তবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এক্স মিলিয়ে ৩৮ বছর বয়সী এই তারকার অনুসারী সংখ্যা এখনো সবচেয়ে বেশি—২ কোটি ৮ লাখ ৫৪ হাজার।

অনুসারী সংখ্যায় সাকিবের ধারেকাছেও কেউ নেই। তাঁর চেয়ে ৪৩ লাখ ৩৯ হাজার অনুসারী কম নিয়ে দুইয়ে আছেন মুশফিকুর রহিম। দেশের ক্রিকেটের ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ হিসেবে পরিচিত মুশফিককে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এক্সে অনুসরণ করেন ১ কোটি ৬৫ লাখ ১৫ হাজার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।

হামজা চৌধুরী, শমিত সোম, ফাহামিদুল ইসলামদের মতো প্রবাসীদের বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে অভিষেক হওয়ার পর দেশের ফুটবল নিয়ে নতুন করে উন্মাদনা তৈরি হলেও জনপ্রিয়তায় ক্রিকেটাররা ঢের এগিয়ে। অনুসারীর দিক থেকে শীর্ষ দশের নয়জনই ক্রিকেটার।

ক্রিকেটারের বাইরে শীর্ষ দশে থাকা একমাত্র ক্রীড়াবিদ বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ডেনমার্কপ্রবাসী জামালের অনুসারী ৩২ লাখ ৮০ হাজার।

সাকিব নাকি হামজা, দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় তারকা বা আইকন কে—কদিন আগে এমন তুলনাও হয়েছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী সংখ্যায় অনেক পিছিয়ে হামজা।

ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপের ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা হামজাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসরণ করেন ২৩ লাখ ৫৬ হাজার মানুষ। ক্রম অনুসারে হামজা আছেন ১৩ নম্বরে।

এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে বাংলাদেশের সব শীর্ষ খেলোয়াড়ের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেজ স্বীকৃত বা ভেরিফায়েড (যাচাইকরণ চিহ্ন হিসেবে ব্লু ব্যাজ থাকা) হলেও বেশির ভাগেরই এক্স অ্যাকাউন্ট ভেরিফায়েড নয়। যাঁদের এক্স অ্যাকাউন্টে ব্লু ব্যাজ নেই, তাঁদের অনুসারী সংখ্যা হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে।

শীর্ষ সাতের পাঁচজনই দেশের ক্রিকেটের একসময়ের ‘পঞ্চপাণ্ডব’। সাকিব, মুশফিকের পরের নামটা তামিম ইকবাল। দেশসেরা ওপেনারের অনুসারী সংখ্যা ১ কোটি ৪ লাখ ১ হাজার। এই তিনজন ছাড়া আর কারও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এক্সে ১ কোটির বেশি স্বীকৃত অনুসারী নেই।

 চারে আছেন দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মাশরাফি অন্তরালে চলে গেলেও এখনো তাঁর অনুসারী সংখ্যা ৯৮ লাখ ৯৭ হাজার।

যথাক্রমে পাঁচে ও ছয়ে আছেন দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান (৯১ লাখ ২১ হাজার) ও তাসকিন আহমেদ (৮০ লাখ ৪ হাজার)। ‘পঞ্চপাণ্ডবের’ শেষজন মাহমুদউল্লাহ আছেন সাতে (৬৫ লাখ ৫২ হাজার)। গত মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।  

তাঁকে অনুসরণ করেন ২৭ লাখ ২২ হাজার মানুষ।

জাতীয় দলে আসা–যাওয়ার মধ্যে থাকা সৌম্য সরকারের অবস্থান আটে। তাঁর অনুসারী সংখ্যা ৩৬ লাখ ২৫ হাজার। শীর্ষ দশের শেষজন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের নতুন ওয়ানডে অধিনায়কের অনুসারী সংখ্যা ৩১ লাখ ৪০ হাজার। সৌম্য আর মিরাজের মাঝে (৯ নম্বরে) আছেন ফুটবল অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া।

নারী ক্রীড়াবিদদের মধ্যে অনুসারী সংখ্যায় সবার ওপরে থাকা নামটাও একজন ক্রিকেটারের। তিনি জাহানারা আলম। তাঁকে অনুসরণ করেন ২৭ লাখ ২২ হাজার জন। ৩২ বছর বয়সী এই পেসার জাতীয় দলে জায়গা হারানোর পর চলে গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়।

ছেলেদের টি–টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক লিটন দাসের চেয়ে জাহানারার অনুসারী মাত্র ৩ হাজার কম। লিটনকে অনুসরণ করেন ২৭ লাখ ২৫ হাজার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী।

জাহানারার পর নারী ক্রীড়াবিদদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুসারী ঋতুপর্ণা চাকমার। গত বছর বাংলাদেশকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতানোর পর থেকে ঋতুপর্ণার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। সম্প্রতি বাংলাদেশকে এএফসি এশিয়ান কাপে তুলতে বড় অবদান রাখা এই মিডফিল্ডারই এখন নারী ফুটবলের ‘পোস্টার গার্ল’। বর্তমানে তাঁর অনুসারী সংখ্যা ৮ লাখ ৮৫ হাজার।

কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দিয়ে এখনো জাতীয় ফুটবল দলের বাইরে থাকা সানজিদা আক্তারের অনুসারী ৭ লাখ ৫৮ হাজার জন। একই কারণে বাইরে থাকা সাবেক অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের অনুসারী ১ লাখ ৯২ হাজার।নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানাকে অনুসরণ করেন ৫ লাখ ৫৬ হাজার জন। এ ছাড়া দেশের সাবেক দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমানকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসরণ করেন ১ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ।

 

Comments