চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়া: কারণ ও করণীয়

Comments · 1 Views

হঠাৎ করে কিংবা দীর্ঘদিন ধরে চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়লে সেটাকে অবহেলা করা বিপজ্জনক হতে পারে।

হঠাৎ করে কিংবা দীর্ঘদিন ধরে চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়লে সেটাকে অবহেলা করা বিপজ্জনক হতে পারে। অনেকেই ভাবেন এটি চোখের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, কেউ কেউ আবার এটিকে চোখের ক্লান্তি বা ঘুম ঘাটতির ফল মনে করেন।

কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘমেয়াদি ও অতিরিক্ত চোখের পানি পড়া অনেক সময় গুরুতর চোখের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

চোখ দিয়ে পানি পড়ার কারণ কী?
চোখ দিয়ে পানি পড়া (ল্যাক্রিমেশন) সাধারণত চোখের অস্বস্তি বা রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েকটি সাধারণ ও জটিল কারণে এমনটা হতে পারে—

অ্যালার্জি বা ধুলাবালি: বায়ুদূষণ, ধুলাবালি বা পরাগরেণুর সংস্পর্শে এলে চোখে অ্যালার্জি হয়। ফলে চোখ চুলকায় ও পানি পড়ে।

চোখের শুষ্কতা: অবাক করার মতো হলেও, চোখে পর্যাপ্ত অশ্রু না থাকলে চোখ নিজে থেকেই পানি তৈরি করে। এতে অতিরিক্ত পানি পড়তে দেখা যায়।

চোখে সংক্রমণ: ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার কারণে কনজাংকটিভাইটিস বা ‘চোখ ওঠা’ হলে লালচে ভাব, জ্বালা ও পানি পড়া হয়।

নাকের অশ্রু নালীর ব্লকেজ: চোখের পানি স্বাভাবিকভাবে নাক দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। কিন্তু এই পথটি বন্ধ হয়ে গেলে পানি জমে থেকে পড়ে যেতে পারে।

চোখে কোনো বস্তু ঢুকলে: ধুলো, ছোট পোকা বা লেন্সের ভুল ব্যবহারেও চোখে পানি পড়তে পারে।

অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম: স্মার্টফোন, কম্পিউটার বা টিভির দিকে একটানা তাকিয়ে থাকলে চোখের স্বাভাবিক পলক পড়া কমে যায়, ফলে শুষ্কতা তৈরি হয় এবং পানি পড়তে পারে।

চিকিৎসা ও করণীয়
চিকিৎসকরা বলেন, চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়া মানেই চোখ সুস্থ নয়— এটা বোঝা খুব জরুরি। অনেক সময় শুষ্ক চোখের কারণে এমন হয়, আবার চোখের সংক্রমণ, অ্যালার্জি বা চোখের অশ্রুনালীতে সমস্যা থাকলেও একই উপসর্গ দেখা যায়। রোগীর বয়স, জীবনধারা ও অন্যান্য উপসর্গ বিবেচনায় রেখে চিকিৎসা দিতে হয়। চোখের পানি পড়ার জন্য যদি কোনো চোখের রোগ যেমন কনজাংকটিভাইটিস, বেলফারাইটিস (পাপড়ি প্রদাহ) বা অশ্রুনালীতে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে থাকে, তবে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কী করবেন?
প্রতিদিন চোখ পরিষ্কার রাখুন। চোখে পানি না দিয়ে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে ফেলুন। বাইরে বের হলে সানগ্লাস ব্যবহার করুন যাতে ধুলাবালি চোখে না যায়। ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানুন: প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কিছু দেখুন। ঠান্ডা পানিতে কাপড় ভিজিয়ে চোখে চেপে রাখলে আরাম পাবেন। চোখে হাত দেওয়া বা চুলকানো এড়িয়ে চলুন।

অ্যালার্জি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিহিস্টামিন ব্যবহার করতে পারেন। চোখ আমাদের দেহের অন্যতম সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। চোখের সামান্য সমস্যা বড় জটিলতায় পরিণত হতে পারে। তাই চোখ দিয়ে নিয়মিত পানি পড়াকে হালকাভাবে না দেখে প্রয়োজন হলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়াই উত্তম।

Comments