শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক দফা ঘোষণা

टिप्पणियाँ · 21 विचारों

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা টিএসসি এলাকায় রাজু ভাস্কর্যের চোখ লাল কাপড় দিয়ে বাঁধেন এবং সন্ধ্যা ৭টার দিকে শাহব?

২০২৪ সালের আজকের এই দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক বিশাল সমাবেশে তৎকালীন স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগে এক দফা দাবি ঘোষণা করেছেন।

 

page-top-ad

আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী নাহিদ ইসলাম বিকেল ৫টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতিতে এই ঘোষণা দেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা টিএসসি এলাকায় রাজু ভাস্কর্যের চোখ লাল কাপড় দিয়ে বাঁধেন এবং সন্ধ্যা ৭টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।

 

সংলাপ প্রত্যাখ্যান : এর আগে, সকালে শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতাদের সাথে বৈঠকে আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি সঙ্ঘাত চাই না। গণভবনের দরজা খোলা।’

 

তবে আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, শুধু প্রধানমন্ত্রীর নয়, সম্পূর্ণ মন্ত্রিসভার পদত্যাগ এবং চলমান আন্দোলনের সময়কার হত্যাকাণ্ড ও নিখোঁজের বিচারের দাবি তারা জানায়।

 

নাহিদ ইসলাম, যিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং বর্তমানে এনসিপির প্রধান, বলেন, ‘আমরা এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা চাই, যেখানে স্বৈরাচার আর কখনো ফিরে আসতে না পারে।’

 

১৫ দফা অসহযোগ কর্মসূচি : অন্য দিকে আন্দোলনের আরেক প্রধান সমন্বয়কারী আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া জনগণের জন্য ১৫ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: কেউ কর বা ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করবে না, সব ধরনের কারখানা ও অফিস বন্ধ থাকবে, প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাবে না, গণপরিবহন ও ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত থাকবে, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভ দমন কিংবা প্রটোকল ডিউটিতে থাকবে না, আমলারা সচিবালয়ে যাবেন না, বিলাসবহুল পণ্য বিক্রয় কেন্দ্র বন্ধ থাকবে, শহরজুড়ে বিক্ষোভ।

 

মোড় অবরোধ : সকাল থেকেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হাজারো মানুষ শহীদ মিনারের দিকে আসে। দোয়েল চত্বর, জগন্নাথ হল, ঢাকা মেডিক্যাল গেট, শিববাড়ী মোড় পর্যন্ত এলাকাজুড়ে ‘দফা এক, দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় (যেমন : বাড্ডা, রামপুরা, বনশ্রী, সায়েন্স ল্যাব, মিরপুর-১০) শিক্ষার্থীরা মোড় অবরোধ করে।

 

জেলা শহরেও উত্তাল প্রতিবাদ : রাজধানীর বাইরেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সিলেট, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, কুমিল্লা, রংপুর ও গাজীপুরে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। কুমিল্লায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা সরাসরি গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। গাজীপুরে এক বিক্ষোভকারী নিহত হন।

 

চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয় এবং গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। একইভাবে এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর কার্যালয়েও আগুন দেয়া হয়। রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

 

সেনাপ্রধানের বার্তা : এ দিন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সেনা সদর দফতরের হেলমেট অডিটোরিয়ামে সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থেই কাজ করব।’ তিনি গুজব ও বিভ্রান্তি থেকে বিরত থাকতে সেনাদের নির্দেশ দেন।

 

সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিবাদ : বিএফইউজে ও ডিইউজে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে কোটা আন্দোলনের সময় নিহত চার সাংবাদিকের ঘটনার বিচার ও সরকারের পদত্যাগ দাবি করে।

 

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া : যুক্তরাষ্ট্রের ২২ জন সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্য ২ আগস্ট মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে লেখা এক চিঠিতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে।

टिप्पणियाँ
खोज