নিহতদের মধ্যে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বিতর্কিত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েল কিছু এলাকায় ‘কৌশলগত বিরতি’র ঘোষণা দিলেও বাস্তবে সহিংসতা থামেনি। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মতে, কেবল বুধবার ও বৃহস্পতিবারই খাবারের খোঁজে বের হয়ে ১০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৩৭৩ জন। অন্যদিকে অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছেন ১৬৯ জন, যাদের মধ্যে ৯৩ জন শিশু।
স্থানীয়রা দাবি করছেন, ইসরায়েলি সেনা ও জিএইচএফ-এর হয়ে কাজ করা মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে সহায়তা প্রত্যাশীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক নিন্দা বাড়তে থাকায় ইসরায়েল সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে জর্ডান, মিশর, ইউএই, জার্মানি, ফ্রান্স ও স্পেনসহ কয়েকটি দেশকে গাজায় আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ করতে দিচ্ছে। তবে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এই এয়ারড্রপগুলো প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানায়, শনিবার মাত্র ৩৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, যেখানে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০ ট্রাক দরকার।
খান ইউনুসে, ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদরদপ্তরে ইসরায়েলি হামলায় একজন কর্মী নিহত ও তিনজন আহত হন। ভবনের প্রথম তলায় আগুন ধরে যায় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হিন্দ খুদারি জানান, সহায়তা পৌঁছালেও বাস্তবে ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা কমেনি। বাজারে খাবার পাওয়া যাচ্ছে না, যা পাওয়া যাচ্ছে সেটি দারুণ ব্যয়বহুল। মানুষকে জীবন ঝুঁকিতে ফেলে তা সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজায় যে দুর্ভিক্ষ চলছে তা “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিচালিত জিএইচএফ-এর মাধ্যমে জাতিসংঘ পরিচালিত সহায়তা ব্যবস্থা সরিয়ে দেওয়ার ফল”।
ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, গাজায় অপুষ্টির মাত্রা ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষের সীমা ছাড়িয়েছে, যেখানে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার শিশুর জীবন এখন হুমকির মুখে।
ইউনিসেফের সহকারী নির্বাহী পরিচালক টেড চাইবান বলেন, “আমরা এখন একটি সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে এবং এখনকার সিদ্ধান্তই ঠিক করে দেবে হাজার হাজার শিশু বাঁচবে না মরবে।”