মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ১১টায় মানিক মিয়া এভিনিউতে এই ড্রোন ড্রামা উপস্থাপন করা হয়। প্রায় ১২ মিনিট ধরে চলা এই ড্রোন ড্রামায় ১২টি মোটিফ উপস্থাপন করা হয়।
Screenshot 2025-08-06 030055
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে মানিক মিয়া এভিনিউতে চলে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান। যেখানে একক ও দলীয়সহ বিভিন্ন ব্যান্ড দল তাদের গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান সূচি অনুযায়ী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘ডু ইউ মিস মি’ ড্রোন ড্রামা উপস্থাপনের কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে সেটি উপস্থাপন করা যায়নি।
Screenshot 2025-08-06 020551
এরপর একের পর এক শো’র সময় পাল্টাতে থাকে। সর্বশেষ রাত সাড়ে ১০টায় শো’টি উপস্থাপনার কথা থাকলেও শুরু হয় আরও আধা ঘণ্টা পরে। এতে ড্রোন শো দেখতে আসা অনেকে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ায় তা না দেখেই বাড়ি ফিরে যান।
অবশেষে রাত ১১টায় সংসদ ভবনের আকাশে উড়তে শুরু করে ১ হাজার ১০০টি ড্রোন। এরপর ১২ মিনিট মন্ত্রমুগ্ধের মতো সেই শো মানিক মিয়া এভিনিউতে দাঁড়িয়ে দেখেন হাজারো মানুষ। আশপাশের ভবন থেকেও এই ড্রোন ড্রামা উপভোগ করেন অনেকে।
ড্রোন ড্রামের বিষয়ে বাংলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক আব্দুল হালিম চঞ্চল বাংলানিউজকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আমাদের ড্রোন ড্রামাটি দেখানোর কথা থাকলেও তখন বৃষ্টির কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। পরে রাত ৯টায় বৃষ্টি থামলে আমরা শো-এর প্রস্তুতি নেই। প্রায় ২ ঘণ্টার প্রস্তুতি শেষে রাত ১১টায় শো'টি উপস্থাপন করা হয়।
Screenshot 2025-08-06 030309
চীনের সহায়তায় এই ড্রোন শোতে মোট ১ হাজার ২০০টি ড্রোন উড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষামূলক অনুশীলনের সময় দুর্ঘটনাবশত কয়েকটি ড্রোন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ১ হাজার ১০০টি ড্রোন দিয়েই শো'র আয়োজন করা হয়।
এই বিষয়ে পরিচালক আব্দুল হালিম চঞ্চল বলেন, আমাদের ২ হাজার ড্রোন দিয়ে এই শো আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু গতকাল বৃষ্টির মধ্যে পরীক্ষামূলক অনুশীলনের সময় কয়েকটি ড্রোন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ড্রোন ড্রামায় যা দেখা গেছে:
শো এর শুরুতে দেখা যায় একটি হাত 'ডু ইউ মিস মি' লেখা একটি প্ল্যাকার্ড ধরে রেখেছে। পরক্ষণেই আকাশে ভেসে উঠে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ভয়ানক মুখাকৃতি। দানবের মতো দাঁত ও চোখ জ্বলজ্বল করা সেই মুখাকৃতি দেখে মানিক মিয়া এভিনিউতে দাঁড়িয়ে শো দেখা দর্শকরা ভুয়া ভুয়া বলে চিৎকার করতে থাকে। এরপর আকাশে ভেসে উঠে হেলিকপ্টারে করে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। যার নিচে ‘খুনিকে ছাড়া ভালো আছে বাংলাদেশ’ লেখা দেখা যায়।
Screenshot 2025-08-06 030143
ড্রোন শো'তে তুলে ধরা হয় শেখ হাসিনার কুকর্মের চিত্রও। দেখানো হয় আয়ানা ঘরের বন্দিদের লোহার খাঁচা। যার নিচে লেখা দেখা যায়, ‘আয়না ঘরের অন্ধকারে বসে আর কাউকে লিখতে হচ্ছে না ‘I Love My Family’’। এরপরেই দেখানো হয় গুম হয়ে যাওয়া সেই কাউন্সিলর একরাম ও তার সন্তানদের ছবি। যার পরক্ষণেই আকাশে ভেসে ওঠে ‘আব্বু তুমি কান্না করতেছো যে- বলে কাঁদছে না কোনো একরামের কন্যা’ লেখা। তারপরই লেখা ভেসে ওঠে, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কথা বলে মরতে হচ্ছে না কোনো আবরার ফাহাদকে’।
এরপরই ‘গণলুটতন্ত্রী সরকারের কোনো মাফিয়া লুট করছে না বাংলাদেশের ব্যাংক’ লেখার সঙ্গে একে একে দেখানো হয় শেখ হাসিনা, সালমান এফ রহমানসহ বিগত সরকারের বিভিন্নজনের মুখায়ব। তারপরই আকাশে ভেসে ওঠে ‘আগে খুনি সরকারের ভয়ে মানুষ পোস্ট ডিলিট করতো, এখন জনগণের ভয়ে সরকার পোস্ট ডিলিট করে’ লেখা।
Screenshot 2025-08-06 030218
এরপর একে একে আকাশে ভেসে উঠে ‘আমরা জানি, ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেশ পুনর্গঠনে পাড়ি দিতে হবে অনেক পথ!’, ‘কিন্তু দুর্গম পথ বলে থামবো না আমরা বাংলাদেশ পক্ষের লোক’, ‘সবাই মিলেই আমরা গড়বো বাংলাদেশ ২.০’ লেখা।
ইত্তেফাক/এমএএম