ড. ইউনূস যেভাবে আলোচনায় এলেন

Komentari · 16 Pogledi

আন্দোলন যখন জোরালোভাবে চলছে, তখন সরকার পতন হলে নতুন সরকারের প্রধান কে হবেন, সেটা নিয়ে অগাস্ট মাসের শুরু থেকেই ??

আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, ''৫ আগস্ট সন্ধ্যায় অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা হয়। চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের কার্যালয় থেকেই আমি তাঁকে ফোন করি। ফ্রান্সের যে হাসপাতালে তিনি ভর্তি ছিলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই অস্ত্রোপচারের জন্য সেটির অপারেশনকক্ষে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার কথা।''

 

''লাউড স্পিকারে আমি আর নাহিদ ভাই তাঁর সঙ্গে কথা বলি। সেদিনই নাহিদ ইসলামের সঙ্গে তাঁর প্রথম কথা হলো। অধ্যাপক ইউনূসকে বললাম, 'স্যার, সরকারের তো পতন হয়ে গেছে। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। সিদ্ধান্ত নিতে হবে।' তাঁকে আমরা জাতীয় সরকারের ধারণার কথাটাই বললাম।''

 

''অধ্যাপক ইউনূস বললেন, তিনি ইতিবাচক, তবে অনেকগুলো ব্যাপার আলোচনা করতে হবে। সবাইকে জানালাম, অধ্যাপক ইউনূস ইতিবাচক।''

 

আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, ''রাতেই আমরা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করলাম। তাঁর সঙ্গে লাউড স্পিকারে নাহিদ ভাই আর আমার ঘণ্টাখানেক কথা হলো।''

 

''অধ্যাপক ইউনূসকে বললাম, 'স্যার, দেশের যে পরিস্থিতি, তাতে দ্রুত ঘোষণা করা দরকার দেশের পরবর্তী প্রধান উপদেষ্টা কে হচ্ছেন।' অধ্যাপক ইউনূস এ ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন যে এক-এগারোর মতো সেনাসমর্থিত সরকার হলে তিনি দায়িত্ব নেবেন না। সরকার তাঁর মতো করেই চলতে হবে। অন্য কেউ সরকার চালালে তিনি থাকবেন না।''

 

''অধ্যাপক ইউনূসকে জানালাম, এটা আমাদেরও মত। সেনাসমর্থিত সরকার হলে আমরাও মানব না। অধ্যাপক ইউনূস ব্যাপারটা নিয়ে আগেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলে নিতে বললেন। নাহিদ ভাই তাঁকে বললেন, হস্তক্ষেপ না করার কথা বললে আমাদেরই দুর্বলতা প্রকাশ পাবে। এর চেয়ে অভ্যুত্থানের প্রতি মানুষের একাত্মতা আর মাঠের শক্তি দিয়েই আমরা তাদের ক্ষমতা থেকে দূরে থাকার বিষয়টা বোঝাতে পারব।''

 

''দীর্ঘ আলোচনার পর অধ্যাপক ইউনূস সম্মত হলেন। 'রাত তিনটায় আমি, নাহিদ ভাই ও বাকের ফেসবুকে একটা ভিডিওতে অধ্যাপক ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদে সম্মত হওয়ার কথা ঘোষণা করি'', লিখেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

 

সেদিন দিবাগত রাত মঙ্গলবার ভোরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

 

সেদিন বিকালে ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোরশেদ বিবিসিকে জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস।

 

মি. ইউনূস বলেছেন, " যে ছাত্ররা এতো ত্যাগ স্বীকার করেছে, এই কঠিন সময়ে তারা যখন আমাকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছে, আমি কিভাবে তাদের প্রত্যাখ্যান করতে পারি?"

 

পরবর্তীতে দায়িত্ব নেওয়ার পরে ২৫শে অগাস্ট জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ''ছাত্ররা তাদের (উপদেষ্টা পরিষদের) প্রাথমিক নিয়োগকর্তা, তারা যখন বলবে, তখন তারা চলে যাবেন।''

 

সেদিন মঙ্গলবার দুপুরের দিকে রাষ্ট্রপতির আদেশে দ্বাদশ সংসদ বিলুপ্তির প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

 

সেই সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগাযোগ ঘটছিল।

Komentari