আবার অনেকেই ফেসবুকে শিশুটির পরিচয় ও সন্ধান জানতে চায়। কিন্তু পরে দেখা গেল সাড়া জাগানো ওই ছবিটি আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এ আই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করা।
বন্যায় মানুষের মানবেতর জীবন - যাপনের এমন সময়ে ভীত - সন্ত্রস্ত শিশুর ওই ছবি মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছিল, অথচ সেটি আসল ছবি ছিলো না।
শুধু বাংলাদেশই নয় বরং বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এআই প্রযুক্তির প্রসারের সাথে সাথে এর ব্যবহার ও অপব্যবহার দুইই বাড়ছে।বিশ্বের অনেক দেশেই এই প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে বিভিন্ন আইনি কাঠামো রয়েছে।দেশগুলোর পূর্ণাঙ্গ আইন, এক্সিকিউটিভ আদেশ, নীতিমালা, পলিসি বা স্ট্রাটেজি, বিল এমন নানা ধরনের আইনি পরিকাঠামো রয়েছে।
ফলে সেসব দেশে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কোন ছবি, ভিডিও বা কনটেন্ট তৈরির সীমা যেমন রয়েছে তেমনি অপব্যবহার রোধের ব্যবস্থাও রয়েছে।কিন্তু বাংলাদেশে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের সীমা বা অপব্যবহার রোধে এখনও আইনি কোনও কাঠামো নেই। অর্থাৎ কোনও সমন্বিত গাইডলাইন বা বিধিমালা, পলিসি বা নীতিমালা এমনকি স্ট্র্যাটেজিও নেই বাংলাদেশে।
ফলে এআই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয় বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং আইনজীবীরা।
তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন পলিসি তৈরিতে কাজ করছে সরকার।
মি. তৈয়্যব বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমাদের একটা টিম ন্যাশনাল এআই পলিসি করার জন্য কাজ করছে। আমরা এখন আরও বেশ কয়েকটি পলিসি নিয়ে কাজ করছি। এই পলিসিগুলো যদি শেষ হয় তখন আমরা ন্যাশনাল এআই পলিসিটাকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সেখানেই সংশ্লিষ্ট সবগুলো বিষয়কে আমরা অ্যাড্রেস করবো।"
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বিএম মইনুল হোসেন মনে করেন, জেনারেটিভ এআই আসার পর যে কারো কণ্ঠ, চেহারা নকল করা হচ্ছে। এটা শুধু আমাদের দেশের জন্যই না বরং সারা বিশ্বের জন্যই এটা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মি. হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, "এআই এর বেশ কিছু কনসার্ন সারা বিশ্বেই যেটা নিয়ে কথা হচ্ছে সেটা হচ্ছে এর এথিকেল ইউজ। এআই কিন্তু ব্যাপকভাবে মিস ইউজ করা যায়। আরেকটা হচ্ছে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর জন্য। মিস ইনফরমেশন, ডিস ইনফরমেশন এআই আসার পর যে পরিমাণ ছড়ানো যাচ্ছে, এটা আগে কখনো দেখি নাই।"
তবে শুধু এআই পলিসি হলেই হবে না বরং এর সাথে সম্পর্কিত আরও কিছু বিষয় যেমন 'ডেটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট, ইনোভেশন ইনডেক্স, ইউজার ডুয়িং বিজনেস' না থাকলে এআই পলিসির সুফল পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন মি. হোসেন।