লক্ষ্য প্রবাসী ভোটার, ইসির নজরে আরও আট দেশ

Комментарии · 41 Просмотры

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ আরও আট দেশে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহের ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ আরও আট দেশে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহের কার্যক্রম হাতে নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি সূত্র বলছে, বর্তমানে নয়টি দেশে এই কার্যক্রম চলছে।

আগামী ১৫ জুলাই থেকে জাপানেও শুরু হবে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, মালদ্বীপ, তুরস্ক, জর্ডান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওমান ও মিশরে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে কমিশন।

ইসি’র এনআইডি শাখার মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর এ বিষয়ে বলেন, বর্তমানে নয়টি দেশে ভোটার কার্যক্রম চলমান আছে। এ মাসেই জাপানে শুরু হবে। এরপর প্রবাসীদের আধিক্য রয়েছে এমন আটটি দেশে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। আশা করি শিগগিরই শুরু করতে পারব।

সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি-বায়রাসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছে ৪০টি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীদের আধিক্য রয়েছে। এসব দেশকেই মাথায় রেখে কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

দেশগুলো হলো— সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, লেবানন, জর্ডান, লিবিয়া, সুদান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, হংকং, মিশর, ব্রুনাই, মৌরিশাস, ইরাক, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, স্পেন, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়া, তুরস্ক ও সাইপ্রাস।

আরও পড়ুন
মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিদের নতুন তথ্য সামনে আনলেন জুলকারনাইন
মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিদের নতুন তথ্য সামনে আনলেন জুলকারনাইন
০৫ জুলাই, ২০২৫
 

 

এসব দেশে এক কোটি ৪০ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ জন প্রবাসী রয়েছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে রয়েছে বেশি প্রবাসী রয়েছে সৌদি আরবে ৪০ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮৮ জন। আর সবচেয়ে কম রয়েছে নিউজিল্যান্ডে দুই হাজার ৫০০ জন।

বর্তমানে নয়টি দেশের ১৬টি স্টেশনে দূতাবাসের মাধ্যমে ভোটার কার্যক্রম পরিচালনা করছে ইসি। দেশগুলো হলো— সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা। এসব দেশ থেকে ৪৭ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এদের মধ্যে ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে ভোটার করে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর সে লক্ষ্য নিয়েই প্রবাসে ভোটার কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে ইসি। ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, তার কমিশন অন্তত শুরুটা করতে চায়। সীমিত পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে চায়।

সিইসি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মতো নির্বাচন কমিশনও আগামী নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে যে পদ্ধতিতেই আমরা এগোই না কেন, প্রথমে পাইলটিং, পরে স্বল্প পরিসরে করতে হবে, এরপর বড় পরিসরে যেতে হবে।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভোটার কার্যক্রম সম্প্রসারণের পাশাপাশি প্রবাসীদের ভোটিং পদ্ধতি নির্ধারণেও কাজ করছে সংস্থাটি। এক্ষেত্রে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এমআইএসটি’র বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকদের সমন্বয়ে অনলাইন, পোস্টাল ও প্রক্সি ভোটিং নিয়ে একটি কারিগরি টিম গঠন করা হয়েছে। যে টিমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দলগুলোর মতামতও নিয়েছে ইসি। বর্তমানে বিভিন্ন অংশীজনের দেওয়া সুপারিশ পর্যালোচনা করছে সংস্থাটি।

প্রবাসীদের চার তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক

বিদেশে বসে ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে পূরণকৃত আবেদনপত্র (ফরম-২ক), মেয়াদ সম্বলিত বাংলাদেশি পাসপোর্ট, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন ও পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি বাধ্যতামূলকভাবে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধন কেন্দ্রে জমা দিতে হবে।

এ ছাড়াও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে তথ্য দিতে হবে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— বিশেষ এলাকার [নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ৫৬টি উপজেলা/থানার (চট্টগ্রাম অঞ্চল) জন্য তথ্য সম্বলিত] নাগরিকদের জন্য ‘বিশেষ তথ্য ফরম’ পূরণ, শিক্ষা সনদ, পিতা-মাতার এনআইডি, মৃত হলে মৃত্যু সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স/টি.আই.এন (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), কতিপয় দেশের ক্ষেত্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), নিকাহনামা এবং স্বামী-স্ত্রীর এনআইডি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), নাগরিকত্ব সনদ (কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান/মেয়র/সিইও কর্তৃক), ইউটিলিটি বিলের কপি (ভোটার এলাকার ঠিকানার বিদ্যুৎ/পানি/গ্যাস বিলের কপি, ভাড়াটিয়া হলে বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র ও বাড়িওয়ালার অনাপত্তিপত্র।

আরও পড়ুন
‘লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকলাম, কিছুই বলতে পারলাম না’
‘লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকলাম, কিছুই বলতে পারলাম না’
০৫ জুলাই, ২০২৫
 

 

বাধ্যতামূলক নয়, এমন তথ্যগুলো নিবন্ধন কেন্দ্রে জমা দিতে না পারলে প্রবাসী নাগরিকের দেশে বসবাসকারী আত্মীয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া যাবে।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগ হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনে ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।

এরপর সৌদি আবর, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা। পরবর্তীতে ২০২২ সালে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করে।

Комментарии