মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে একটি সদ্য প্রতিষ্ঠিত পুলিশ ক্যাম্পে নৌ ডাকাতদল হামলা চালিয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৫টা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে শতাধিক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়। তবে পুলিশের কোনো সদস্য আহত হননি।
জানা গেছে, নয়ন, পিয়াস ও রিপন বাহিনীর ৩০-৪০ জন সদস্য ৫-৬টি দ্রুতগতির ট্রলারে করে ক্যাম্পের দিকে এসে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। স্থানীয়দের মতে, হামলাকারীরা প্রায় ১০০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে, এবং পুলিশ প্রায় ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে এই গোলাগুলি চলে।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘নৌ ডাকাত নয়ন, পিয়াস, রিপনের নেতৃত্বে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পাঁচ-ছয়টি ট্রলার নিয়ে আমাদের ওপর হামলা হয়। হামলাকারীদের দলে ৪০ জনের ওপরে সদস্য ছিল। তারা দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ প্রস্তুতি নিয়ে হামলা করে। তাদের হাতের অস্ত্রগুলো দেখে মনে হয়েছে, থানা থেকে লুট করা অস্ত্র। হামলাকারীরা আমাদের লক্ষ্য করে শতাধিক গুলি করেছে। আমাদের দিক থেকে ১৯টির মতো গুলি করা হয়। আমাদের কোনো পুলিশ সদস্য আহত হননি। তবে কোনো সন্ত্রাসী আহত হয়েছে কি না, তা আমরা প্রাথমিকভাবে বলতে পারছি না।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই ডাকাতদল দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাদের ভয়ে বহু পরিবার গ্রামছাড়া হয়েছিল। সম্প্রতি পুলিশ ক্যাম্প চালু হওয়ার পর সাধারণ মানুষ স্বস্তি ফিরে পাচ্ছিল। ডাকাতদল সম্ভবত এই ক্যাম্প বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই হামলা চালিয়েছে।
মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘পুলিশ ক্যাম্প হওয়ার পর নৌপথের ডাকাতেরা আর সুবিধা করতে পারছে না। এতে তারা পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত। তবে আমরা সাধারণ মানুষকে বলতে চাই, পুলিশ আপনাদের পক্ষে রয়েছে। পুলিশ তাদের পেশাদারত্ব সঠিকভাবে পালন করবে। কোনো ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের পুলিশ ভয় পায় না। গুয়াগাছিয়ার সব ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের নির্মূল করে অপরাধ শূন্যের কোঠায় আনা হবে।’
Search
Popular Posts