১৫ হাজার কোটি রুপির সম্পত্তি কি হারাচ্ছেন সাইফ

Kommentarer · 40 Visninger

বিনোদন ডেস্ক

ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে সাইফ আলী খানের পৈতৃক সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার মুখে। ভারতে আজকের বাজারদর অনুযায়ী যার মূল্য অন্তত ১৫ হাজার কোটি রুপি। পতৌদি পরিবারের ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সাইফের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট। খবর ইন্ডিয়া টুডের

 
 

সাইফ আলী ও তাঁর পরিবার ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খানের বংশধর। হামিদুল্লাহ ১৯২৬ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত ভোপালের শাসক ছিলেন। ১৯৪৯ সালে চুক্তির মাধ্যমে তিনি ভোপালকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করেন।

সাইফ আলী খান। এএনআই
সাইফ আলী খান। এএনআই

১৯৫৫ সালের রাজস্ব নথি অনুযায়ী, সরকার ৫ হাজার ৭৯৬ একর জমি নবাবের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর মধ্যে রয়েছে ৮৩০ একর ফেরদৌস ফার্মস, ৩ হাজার ৮৭ একরের চিকলোড রিট্রিট, ৩৬ একরের রিজওয়ান ফার্মস ও শুটিং রেঞ্জ।

 

হামিদুল্লাহ খানের তিন মেয়ে। আবিদা সুলতান, সাজিদা সুলতান ও রাবিয়া সুলতান। বড় মেয়ে আবিদা ১৯৫০ সালে বিয়ে করে পাকিস্তান চলে যান। তখন নবাবের উত্তরাধিকারীর স্বীকৃতি দেওয়া হয় মেজ মেয়ে সাজিদাকে। সাজিদা বিয়ে করেছিলেন হরিয়ানার পতৌদির নবাব ইফতিখার আলী খান পতৌদিকে। ইফতিখারের ছেলে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মনসুর আলী খান পতৌদি। মনসুর ও শর্মিলা ঠাকুরের সন্তান সাইফ, অর্থাৎ সাইফ হলেন হামিদুল্লাহ খানের প্রপৌত্র।
সাজিদা সুলতানের মৃত্যু হয় ১৯৯৫ সালে। তাঁর সম্পত্তি ভাগ করে দেওয়া হয় ছেলে মনসুর আলী খান এবং দুই মেয়ে সালেহা ও সাবিয়া সুলতানের মধ্যে। মনসুর আলী খানের মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তির উত্তরাধিকার হন ছেলে সাইফ এবং দুই মেয়ে সোহা ও সাবা আলী খান।

আরও পড়ুন

উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সাইফের সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ভোপালের নুর উস সাবাহ প্যালেস, ভোপালের ৫ হাজার ৭৯৬ একর ও ভোপালের বাইরে ১ হাজার ৩৭০ একর জমি এবং ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউস। এই বাড়িতেই সাইফের জন্ম।
চীনের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ হয় ১৯৬২ সালে, পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬৫ সালে। ওই দুই যুদ্ধের পর ১৯৬৮ সালে ‘শত্রু সম্পত্তি আইন’ প্রণয়ন করা হয়। আইন অনুযায়ী, যাঁরা পাকাপাকিভাবে পাকিস্তান ও চীনে চলে গেছেন, ভারতে থাকা তাঁদের সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি বলে গণ্য হবে। রাষ্ট্র হবে তার মালিক।

২০১৪ সালে ভোপালের খান পরিবারের সম্পত্তি ‘শত্রু সম্পত্তি’ বলে ঘোষণা করা হয়, যেহেতু আবিদা সুলতান পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে ভারত সরকার শত্রু সম্পত্তি আইনে সংশোধন আনে। তাতে বলা হয়, উত্তরাধিকারীদেরও শত্রু সম্পত্তিতে কোনো অধিকার থাকবে না।

‘তাণ্ডব’–এ সাইফ আলী খান। আইএমডিবি
‘তাণ্ডব’–এ সাইফ আলী খান। আইএমডিবি

২০১৫ সালে সাইফ এ নিয়ে মধ্য প্রদেশের হাইকোর্টে একটি মামলা করেন। তাঁর দাবি, চুক্তির শর্ত ভেঙে ওই সম্পত্তি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, ১৯৬২ সালেই সরকারি সনদে সাজিদাকে নবাব হামিদুল্লাহর একমাত্র উত্তরাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। সরকারি সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সেই স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনালে আবেদনের জন্য সাইফকে ৩০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে এই বছরের ৮ জানুয়ারি সাইফ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন যুগ্ম সচিবের কাছে এক আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন।

২০১৯ সালে আদালত জানিয়ে দেন, সাজিদা সুলতান ওই সম্পত্তির বৈধ উত্তরসূরি। তাঁর নাতি সাইফ আলী খানের সেই সম্পত্তিতে অংশ রয়েছে। কিন্তু আবিদা পাকিস্তানে চলে যাওয়ায় ভারত সরকার এটিকে শত্রু সম্পত্তি বলে দাবি করে। আর এ সম্পত্তির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর থেকেই নতুন করে সমস্যা দেখা দেয়। এবার সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সাইফের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট।
আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর সাইফের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

 
Kommentarer