চার শব্দের মূলমন্ত্রে চলে নেদারল্যান্ডস ক্রিকেট দল

تبصرے · 29 مناظر

সেলফনেসনেস—নিঃস্বার্থতা
ওনারশিপ— দায়িত্ব নেওয়া
ইউনিটি— একতা ধরে রাখা
লার্নিং— শেখা
এটুকু পড়ে বিরক্ত?

সেলফনেসনেস—নিঃস্বার্থতা
ওনারশিপ— দায়িত্ব নেওয়া
ইউনিটি— একতা ধরে রাখা
লার্নিং— শেখা
এটুকু পড়ে বিরক্তি চলে আসাটা অস্বাভাবিক নয়। খেলার খবর পড়তে গিয়ে ইংরেজি শব্দার্থ দেখার যৌক্তিকতা আসলেই নেই। কিন্তু ইংরেজি শব্দগুলোই জরুরি আজ থেকে শুরু হওয়া টি–টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস দলটাকে বুঝতে।

ওপরের চারটি ইংরেজি শব্দের আদ্যক্ষরগুলো মিলিয়ে দেখুন আবার—‘এস’, ‘ও’, ‘ইউ’ আর ‘এল’। পুরো শব্দটা একসঙ্গে করলে ইংরেজিতে হয় SOUL—শব্দটার অনেকগুলো বাংলা মানের একটা হৃদয়। বাংলা শব্দটা যে নেদারল্যান্ডসের ক্রিকেটারদের জানার কথা নয়, তা তো বলা বাহুল্য। তবে তাঁদের সবার হৃদয়েই ঢুকে আছে এই মন্ত্র। চারটি আদ্যক্ষরের পূর্ণ রূপই তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার নীতি।
ভাঙাচোরা ঘরোয়া ক্রিকেট আর দেশে খেলাটার পরিচিতি খুব সামান্য হওয়ার পরও নেদারল্যান্ডস যে বিশ্বকাপ খেলে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশের মতো দলকেও হারিয়ে দেয়, তা এই মন্ত্র জপেই।

অনুশীলনের ফাঁকে একটু আড্ডা
অনুশীলনের ফাঁকে একটু আড্ডাবিসিবি

নেদারল্যান্ডসে ক্রিকেটের অবকাঠামো তেমন নেই। বোর্ড চুক্তিতে রাখতে পারে কেবল তিনজন ক্রিকেটারকে। দলের ক্রিকেটারদের প্রায় সবারই ভিত্তিটা তৈরি অন্য কোথাও। কারও মা–বাবা দেশ পাল্টে থিতু হয়েছেন নেদারল্যান্ডসে, কারও জন্ম ওখানে হলেও ক্রিকেটের ভিত গড়েছেন অস্ট্রেলিয়া–নিউজিল্যান্ডে।
আলাদা সংস্কৃতি, ধর্ম ও ভিন্ন যাত্রাপথ পাড়ি দিয়ে আসা ক্রিকেটারদের মধ্যে ‘SOUL’–এর মন্ত্র ঢুকিয়ে দিয়েছেন দলটির কোচ রায়ান কুক। একসময় বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ কাল এই তত্ত্ব নিয়ে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘এটা আমাদের দলের ভ্যালু সিস্টেম, যেটার ওপরেই আসলে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। প্রতিনিয়ত নিজেদের প্রশ্ন করি, কাজগুলো ঠিকঠাক করতে পারছি কি না। সেটার ওপর ভিত্তি করে নিজেদের মূল্যায়নও করি।’
সূত্রের প্রথম স্তর মানে ‘নিঃস্বার্থতা’ মেনে ক্রিকেটাররা মাঠে বোতল কুড়ানো, ব্যাগ গোছানোর মতো কাজগুলো নিজেরাই করেন। সতীর্থের যেকোনো সমস্যায় নিজেদের স্বার্থ ত্যাগের বিষয়টিও তাঁদের প্রতি ম্যাচের আগে মনে করিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

পরের সূত্রে তাঁদেরকে বলা হয় যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিতে। তৃতীয় স্তরটি ডাচ দলের কোচের ভাষায় ‘ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ’। তাঁদের অনুশীলনের সূচি বেশি আগে থেকে নির্ধারণ করা থাকে না। ক্রিকেটারদের মাঠে নেমে যেতে হয় দু–এক দিনের নোটিশে। সবাই আসেন ভিন্ন ভিন্ন বাস্তবতা থেকে।
একতাবদ্ধ থাকার কথাটা তাই তাঁদের মনে করিয়ে দেওয়া হয় আলাদা করেই, ‘এটা আমাদের দলকে একসঙ্গে রাখারও একটা সূত্র। যেন নির্দিষ্ট একটা বিষয় নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি।’ শেষ স্তরে শেখার ভাবনা তাঁদের থাকে দুনিয়াজুড়েই। কখনো ক্রিকেটে তুলনামূলক অপরিচিত কোনো দেশ, দিন কয়েক পরই টেস্ট খেলুড়ে দাপুটে কোনো প্রতিপক্ষ—এমন ভিন্ন ভিন্ন বাস্তবতায় নিজেদের মানিয়ে নিতে ‘শেখার’ কোনো বিকল্প নেই তাঁদের জন্য। সব মিলিয়ে ‘SOUL’–ই নেদারল্যান্ডসের এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র।

تبصرے