দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় থাকা সাইফ পাওয়ারটেকের 'রাজত্ব' শেষ হচ্ছে। আজ সোমবার (৭ জুলাই) থেকে এই টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে নৌবাহিনী পরিচালিত সামরিক জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেড। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় বিতর্কিত সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে আর চুক্তি করছে না বন্দর কর্তৃপক্ষ।
রোববার (৬ জুলাই) সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে বন্দরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। যদিও এনসিটি থেকে সাইফ পাওয়ারটেককে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি আগেই চূড়ান্ত হয়েছিল। প্রথমে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেই টার্মিনালটি পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিলেও, পরে সরকার নৌবাহিনীকে দায়িত্ব দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে আইনি জটিলতার কারণে সরাসরি নৌবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব হয়নি; তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান ড্রাইডককে এনসিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, ড্রাইডকের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় অনুমোদন হয়েছে। সোমবার থেকে ছয় মাসের জন্য চুক্তি হবে এবং এদিন সাইফ পাওয়ারটেক আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে।
এর আগে এনসিটি বিদেশিদের হাতে না দেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন পক্ষ সোচ্চার হলেও, অভিযোগ ওঠে যে এই আন্দোলনের আড়ালে সাইফ পাওয়ারটেককে রক্ষা করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।
জানা যায়, সাইফ পাওয়ারটেক ২০০৫ সালে বন্দরের যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলটির শীর্ষ নেতাদের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংসহ বিভিন্ন খাতে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। সরকারের উচ্চ মহলের সিদ্ধান্তে বন্দর কর্তৃপক্ষ টেন্ডার ছাড়াই বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছে। এমনকি, টেন্ডার হলেও এমন সব শর্ত দেওয়া হতো যাতে সাইফ পাওয়ারটেক ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিনের সঙ্গে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, নূর-ই-আলম চৌধুরী, সামশুল হক চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ. জ. ম নাছির উদ্দীনসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এই ঘনিষ্ঠতাই তার প্রধান সম্পদ ছিল, যার মাধ্যমে তিনি কেবল বন্দর নয়, দেশের আরও অনেক বড় সরকারি প্রকল্পে প্রবেশাধিকার পান।
সাইফ পাওয়ারটেকের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে দুবাইভিত্তিক সাফিন ফিডার কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতার ঘোষণা দিয়ে শেয়ারবাজারে শেয়ারদর বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। এর বাইরে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে খোলা প্রতিষ্ঠান ‘সাইফ মেরিটাইম এলএলসির’-অর্থ বাংলাদেশ থেকে কীভাবে পাচার হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা সাইফ পাওয়ারটেকের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, রাজস্ব ফাঁকি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সরকারি কাজ বাগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
Aramak
popüler gönderiler
-
পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি পেতে কী খাবেনTarafından Tariqul Islam
-
৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে শ্রীলঙ্কাTarafından juai
-
-
-
মন ছুঁয়ে গেল আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’Tarafından Abid Hasan