সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে ইসির সামনে পাবনাবাসীর বিক্ষোভ

মন্তব্য · 5 ভিউ

পাবনা-১ সংসদীয় আসন সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন পাবনাবাসী।

SAMAKAL | GET THE LATEST ONLINE BANGLA NEWS

 

রাজধানী

সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে ইসির সামনে পাবনাবাসীর বিক্ষোভ

 

সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে ইসির সামনে পাবনাবাসীর বিক্ষোভ

ছবি: সমকাল

 

 

 

সমকাল প্রতিবেদক

 

 প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৩:২৯

 

FacebookXWhatsAppLinkedInTelegramMessengerEmailShare

-

+

পাবনা-১ সংসদীয় আসন সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন পাবনাবাসী।

 

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে পাবনা-১ আসনের শতশত ভোটার জড়ো হন।

 

 

এসময় তারা ‘ইসির অবৈধ গেজেট মানি না, মানব না’; ‘পাবনার সাঁথিয়া-বেড়া ভাই ভাই, বিভক্তি মানি না’ এমন স্লোগান দিতে থাকেন।

 

বেড়া পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আসাদ্দুজামান নয়ন বলেন, আমরা পাবনা-১ সংসদীয় আসনের বেড়া উপজেলার সর্বস্তরের জনগণে পক্ষে আমাদের আসনের সীমানা পুনর্বহালের দাবি নিয়ে এখানে এসেছি।

 

তিনি বলেন, বেড়া উপজেলা পরিষদ থেকে সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের দূরত্ব ৮ কিলোমিটারেরও কম। অপরদিকে বেড়া উপজেলা পরিষদ থেকে সুজানগর উপজেলা পরিষদের দূরত্ব প্রায় ৩৮-৪০ কিলোমিটার। সুতরাং ভৌগোলিক বাস্তবতায় সাঁথিয়ার সাথেই বেড়ার সংযোগ সবচেয়ে যৌক্তিক।

 

বেড়া কলেজ শাখার ছাত্রদলের আহ্বায়ক সালমান হোসেন বলেন, পাবনা-১ আসনে সাঁথিয়া ও বেড়া (আংশিক) পূর্বের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে এখানে মানববন্ধন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এখানে আমরা অবস্থান করব।

 

এসময় তারা সাঁথিয়া ও বেড়া (আংশিক) পুনর্বহালের জন্য ৭ কারণ তুলে ধরেন...

 

১. ভৌগোলিক নিকটবর্তিতা: বেড়া উপজেলা পরিষদ থেকে সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের দূরত্ব ৮ কিলোমিটারের কম। অপরদিকে বেড়া উপজেলা পরিষদ থেকে সুজানগর উপজেলা পরিষদের দূরত্ব প্রায় ৩৮-৪০ কিলোমিটার। সুতরাং ভৌগোলিক বাস্তবতায় সাঁথিয়ার সাথেই বেড়ার সংযোগ সবচেয়ে যৌক্তিক।

 

২. ভোটার সংখ্যার ভারসাম্য: সাঁথিয়া (১০টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভা) ভোটার সংখ্যা: ৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৮ জন। এই সংখ্যা নির্বাচন কমিশনের নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অপরদিকে বেড়া-সুজানগর একত্র করলে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৬৭ জন, যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অতিরিক্ত।

 

৩. নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা: নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী ভোটার পার্থক্য সর্বোচ্চ ৩০% এর মধ্যে থাকতে হবে। বেড়া ও সুজানগর একত্র করলে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪০% বেশি হয়ে যায়, যা নীতিমালা বহির্ভূত।

 

৪. শিক্ষা ও সংস্কৃতির মিল: সাঁথিয়া, বেড়া ও সুজানগর উপজেলার জনগণের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জীবনধারা এক ও অভিন্ন। তাই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও সাঁথিয়া-বেড়া সংযুক্তিই যৌক্তিক।

 

৫. নদী বন্দর ও যোগাযোগ ব্যবস্থা: বেড়া উপজেলায় ৩টি প্রধান নদীবন্দর রয়েছে: বেড়া পোর্ট, নগরবাড়ি ঘাট, কাজিরহাট ঘাট, পূর্বের সীমানায় ১টি বন্দর পাবনা-১ এ এবং ২টি বন্দর পাবনা-২ এ অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা ভারসাম্যপূর্ণ। যদি সুজানগরের সাথে বেড়া উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৪টি ইউনিয়ন যুক্ত করে দিলে ৩টি নদী বন্দরই পাবনা-২ সুজানগর এ চলে যায়, অপর দিকে সাঁথিয়া উপজেলার কোনও নদী বন্দর থাকে না যার কারণে কোনও উন্নয়ন হবে না। সাঁথিয়ার সাথে বেড়ার সড়ক যোগযাযোগ দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার আর বেড়া উপজেলা থেকে সুজানগর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার সুতরাং একজন সাধারণ নাগরিকের জন্য, তাই প্রশাসনিক বা দাপ্তরিক কাজ করা খুবই কষ্টকর।

 

৬. প্রশাসনিক ভারসাম্য: বেড়া আংশিক সুজানগর উপজেলার সাথে যুক্ত হলে সুজানগরে ২টি পৌরসভা ও ১৯ টি ইউনিয়ন হবে, অপরদিকে সাঁথিয়া উপজেলাতে মাত্র ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে। যা সুজানগর উপজেলার অর্ধেক হয়। সুতরাং সাঁথিয়া উপজেলার চেয়ে সুজানগর উপজেলা দ্বিগুণ হয় যা কোনোমতেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে প্রশাসনিক সেবায় অসামঞ্জস্যতা তৈরি হবে।

 

৭. ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: অতীতেও ৪০ বছরের ইতিহাসে নির্বাচন কমিশন গোলক বাস্তবতা, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও যোগাযোগের সুবিধা বিবেচনা করে পাবনা-১ (সাঁথিয়া বেড়া আংশিক) ও পাবনা-২ (সুজানগর+বেড়া আংশিক) নির্ধারণ করেছিল।

 

এলাকাবাসী জানান, ভৌগোলিক অবস্থান, ভোটার ভারসাম্য, নীতিমালা, শিক্ষা-সংস্কৃতি, নদী বন্দর, যোগাযোগ ব্যবস্থা, প্রশাসনিক কাঠামো ও ঐতিহাসিক বাস্তবতা বিবেচনায় সাঁথিয়া আংশিক বেড়া পুনর্বহালই একমাত্র যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সমাধান।

গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকে সারাদেশের অনেক জায়গায় সীমানা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু সংশ্লিষ্ট আসনের এলাকাবাসীরা।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, সীমানা পুণঃনির্ধারণে ইসি সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। এ নিয়ে আদালতে বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।

মন্তব্য
অনুসন্ধান করুন