কমেছে কর্মসংস্থান, বেড়েছে বেকার

Yorumlar · 16 Görüntüler

বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে কমেছে বিনিয়োগ, কমেছে কর্মসংস্থানও। কার্যাদেশ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পোশা??

বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে কমেছে বিনিয়োগ, কমেছে কর্মসংস্থানও। কার্যাদেশ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পোশাক-ওষুধ কারখানা, পুঁজির ঘাটতিতে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা।

 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগে বেকার সংখ্যা ৫ লাখ ৮৪ হাজার। জেলার মোট জনসংখ্যা ৯১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ জন।

 
 

এর মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি অর্থাৎ ৫ লাখ ৮৮ হাজার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী নন।

 

এক দশক আগেও চট্টগ্রামে পোশাক খাতে শ্রমিক ছিল প্রায় ১৯ লাখ। এখন সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৯ লাখে। চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশ-৩ এর পরিসংখ্যান অনুসারে, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ কয়েকটি সংস্থার মোট ৫৮০টি পোশাক কারখানার মধ্যে চালু আছে ৫২৮টি। গত এক বছরে কার্যাদেশ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে ৫২টির বেশি কারখানা।  

এছাড়া গত তিন দশকে চট্টগ্রামে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের (জিএসকে) কারখানাসহ ৩০টির বেশি ওষুধ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, চালু আছে ৮-১০টি। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর চার হাজারের অধিক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। পাশাপাশি হাতছাড়া হয়েছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার বিনিয়োগ।

২০০০ সাল পরবর্তী মৎস্য রফতানিতে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের আধিপত্য থাকলেও দুই দশকের মধ্যে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান। এখন ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪টি চালু থাকলেও আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর্যায়ে। একইসাথে গত এক দশকে অন্তত এক হাজার জুতার কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। কাঙ্ক্ষিত ঋণের অভাবে চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অনেক উদ্যোক্তা ছেড়েছেন ব্যবসা।  ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর প্রায় ৭ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী বেসরকারি ব্যাংকের চাকরি হারিয়েছেন, যাদের সবাই পটিয়ার বাসিন্দা।

২০১৯-২০ অর্থবছরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৮৭টি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল ৩ হাজার ২২৭ কোটি ২৭ লাখ টাকার। কর্মসংস্থান হয় ১২ হাজার ৮৫৮ জনের। ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৮টি খাতে ১২৪টি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল ২ হাজার ৪৯৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার। কর্মসংস্থান হয় ৮ হাজার ৮৪১ জনের। ২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিনিয়োগ প্রস্তাব কমে যায় আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় পরের অর্থবছরে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৮.৮০ শতাংশ।

জনশুমারি ও গৃহগণনার জেলা প্রতিবেদন অনুসারে, চট্টগ্রাম নগর ও ১৫ উপজেলায় নিট জনসংখ্যার মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। পুরো জেলায় প্রায় ৪৬.৬২ শতাংশ নারী নিট জনসংখ্যার আওতায়, সংখ্যায় যা ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৩৮৪ জন। পুরুষ গড়ে ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ, সংখ্যায় ১ লাখ ১০ হাজার ৯২৬ জন। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৩০.৩৮ শতাংশ (৫ লাখ ৮৮ হাজার ৩১০ জন) শিক্ষা, প্রশিক্ষণ কিংবা কোনো কাজে জড়িত নেই।  

জেলায় প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজারের বেশি এবং গ্রামাঞ্চলে ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি, সিটি করপোরেশন এলাকায় ১ লাখের বেশি যুবক এখন বেকার। তারা কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না, কিংবা বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা ও ব্যবসার পরিকল্পনার কারণে কোনও কাজ করছেন না। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আইটি, সেলাই, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে সরকারি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও অনেক যুবক এতে যুক্ত হতে চান না।  

অপরদিকে প্রতিবছর অনেকে শ্রমিক হিসেবে বিদেশে গিয়ে আবার দেশে ফিরে আসছেন। গত পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রবাসীদের মধ্যে স্থায়ীভাবে দেশে ফিরেছেন ৩৬.৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি তিনজনের একজন চট্টগ্রামের।

চট্টগ্রাম জেলায় ১০ বছরের সাক্ষরতার হার বেড়েছে ২২.১৫ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামে সাক্ষরতার হার ৮১.০৬। এর মধ্যে নারী ৭৯.২৬ শতাংশ এবং পুরুষ ৮২.৮৮ শতাংশ।  

Yorumlar