নিজেদের বয়ান প্রচারের অভাবে সঙ্কটে বিএনপি

Comments · 23 Views

রাজনীতিতে নিজেদের ন্যারেটিভ প্রচার করতে না পারায় বিএনপি সঙ্কটে পড়ছে বলে মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা। এছা??

রাজনীতিতে নিজেদের ন্যারেটিভ প্রচার করতে না পারায় বিএনপি সঙ্কটে পড়ছে বলে মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া সিদ্ধান্তের দীর্ঘসূত্রিতা, নেতৃত্বে চেইন অব কমান্ডের স্ট্রাকচার না থাকা, দলের নির্দিষ্ট একক কৌশল প্রণয়ণে সিদ্ধান্তহীনতা, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রার্থী নির্ধারণে দোদুল্যমানতা ও দলটির বিরুদ্ধে ব্যাপক সংঘবদ্ধ নেতিবাচক প্রচারণা তরুণদের মাঝে দলটির ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এছাড়াও ভারতপন্থী ট্যাগও দলটির চিয়ারত রাজনৈতিক ইমেজকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে বলে করছেন বিশ্লেষকরা।  

 

অন্যদিকে বিএনপির নেতাদেরও অনেকে মনে করছেন, বিএনপি দলটিই নিজেই একটি ন্যারেটিভ। দলের নামের মধ্যেই রয়েছে এই সহজাত শক্তিশালী বয়ান। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, সবার আগে বাংলাদেশ, উদার ধর্মীয় স্বাধীনতা, সকল-মত-পথ, ধর্ম -বর্ণে একক বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের চেয়ে তো আর বড় ন্যারেটিভ এখন হতে পারে না। আমাদের এখন যে শুধু ন্যারেটিভের ব্যাপক ব্রান্ডিং করার সঙ্কট তা নয়, জনগণের মাঝে গত দেড় বছরে বিএনপি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছে। এছাড়া দলটিকে নিয়ে জনমনে ব্যাপক ইতিবাচক প্রত্যাশা যা এখনও বিদ্যামান। কিন্তু জেলা-উপজেলায় দলের একটি অংশের নেতিবাচক কাজকর্মে জনমনে দলটির একাংশ সম্পর্কে আস্থার সঙ্কটও সৃষ্টি করেছে। কেননা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে দল থেকে যাদের বহিষ্কার করা হয়, ঐ নির্বাচনই এলাকাতেই বিএনপির অন্যগ্রুপ তাদেরকে নিয়েই আবার দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে। এতে বহিষ্কার শুধু কাগজে পরিনত হয় আর নির্বিঘ্নে চলে বহিষ্কৃতদের দলখদারি ও চাঁদাবাজি।  

বিএনপির একাধিক নেতা এই ইসু্যতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারেক রহমানের বেশিরভাগ সিদ্ধান্তই এখন বাস্তবায়ন হয় না। বহিষ্কৃতদের সাথে যারা সম্পর্ক রাখবে যদি তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থান নেওয়া যেত তাহলে মানুষের মাঝে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হতো। যদি চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া যেত তাহলে আরো ভালো হতো।  তারেক রহমান বার বার পরিবর্তনের কথা বলছেন কিন্তু সেই পরিবর্তন বিএনপি দৃশ্যমান করতে পারছে না। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মন্দের ভালো হিসেবে অন্যরা সুযোগ নিচ্ছে। আর বিএনপির বিরুদ্ধে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র তো আছেই।     

রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, সূফীবাদী ইসলামী মূল্যবোধ, ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী ন্যারেটিভের চেয়ে শক্তিশালী ন্যারেটিভ আর নেই। বিএনপির জন্ম ও জনপ্রিয়তা অর্জনের ভিত্তিও ছিল এসব। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ভারতপন্থীদের বিরুদ্ধে বিপ্লবের মাধ্যমে  ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানের উত্থান। সেখান থেকেই সারাদেশের ইসলামী মূল্যবোধ, দেশপ্রেমিক বাম ও উদারপন্থী মানুষের মিলনস্থল ছিল বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ধারক বিএনপি। কিন্তু  এসব প্রচার, প্রসার ও তরুণ প্রজন্মের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরতে বিএনপির শক্তিশালী উইং নেই। যার কারণে জেন-জি সহ তরুণ প্রজন্মের কাছে জামাত ও অন্যান্য দলগুলো সেই সুযোগ নিচ্ছে।  

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারি  বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি নিজেই একটি ন্যারেটিভ ছিল। জিয়াউর রহমানের সততা, ভারতের আধিপত্যবাদ বিরোধী রাজনীতি বিএনপি ধরে রাখলে এবং তা ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে বিএনপির ন্যারিটেভ শক্তিশালী করা সম্ভব।  

প্রবীণ এ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন,  ডাকসু ও জাকসুতে যাই হোক।  জাতীয় পর্যায়ে বিএনপি শক্তিশালী দল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১৫ বছর ছাত্রদলকে স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে দেওয়া হয়নি।  আওয়ামী লীগ মনে করতো তাদের চ্যালেঞ্জ ছাত্রদল। এজন্য হলগুলোতে ছাত্রদলকে থাকতে দেওয়া হয়নি। যার কারণে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের মেশারও সুযোগ ঘটেনি ।  অন্যদিকে শিবির সাধারন ছাত্র হয়ে, ওদের সাথে মিশেছে।  

Comments