বাংলাদেশে এই সাপটি সবুজ বোড়া নামেই বেশি পরিচিত।
সাপ উদ্ধারকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, পাহাড় থেকে কেটে আনা কলার ছড়ি বাজারে বিক্রি করতে আনার পর এর ভেতর থেকে সাপটি বেরিয়ে এলে সেসময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাজারে।
পরে ফাউন্ডেশনে খবর দেয়া হলে তারা গিয়ে সবুজরঙা সাপটিকে উদ্ধার করে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন।পরে বনবিভাগ লাউয়াছড়া উদ্যানে সাপটিকে অবমুক্ত করে বলে জানান মি. দেব।এ ঘটনার পর সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে পিট ভাইপার নিয়ে নানা ধরনের আগ্রহ দেখা গেছে।
সাপটি কতটা বিষধর কিংবা প্রাণঘাতী কি-না, এমন নানা প্রশ্নও উঠে আসে আলোচনায়।প্রাণীবিদেরা বলছেন, পিট ভাইপার মূলত মধ্যম মাত্রার বিষধর সাপ। এটি ভিপারিডি পরিবারের ক্রোটালিনি উপপরিবারের অন্তর্গত।
পিট ভাইপার নামটি এসেছে এদের চোখ ও নাকের মাঝখানে অবস্থিত "পিট" নামক দুটি তাপ-সংবেদনশীল অঙ্গের কারণে।
এর ভেতরে একটি পাতলা ঝিল্লি থাকে, যা অপটিক নার্ভের মাধ্যমে সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত।
সামনে মুখ করা এ দুইটি অঙ্গের মাধ্যমেই পিট ভাইপার শিকারের শরীরের উষ্ণতা থেকে মস্তিষ্কের ভেতরে এর ছবি তৈরি করতে পারে এবং অন্ধকারের মধ্যেও উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট শিকারের অবস্থান ও দূরত্ব নিখুঁতভাবে নিশানা করে আঘাত করতে পারে।
এদের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এরা বিষদাঁত দুটো কেবল প্রয়োজন পড়লেই বাইরে বের করে। অন্য সময় এগুলো মুখের ভেতরের দিকে ভাঁজ করে রাখতে পারে।
পিট ভাইপার ৯০ থেকে ১৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। তবে কোনো কোনো প্রজাতির দৈর্ঘ্য দুই মিটার পর্যন্তও হতে পারে।
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্র্রিটানিকার তথ্যমতে, মরুভূমি থেকে শুরু করে রেইনফরেস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবেশে পিট ভাইপার পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে ১২০টি প্রজাতির সাপের তালিকা করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মোঃ আবু সাইদ। তালিকার ১০৭টি প্রজাতির সাপের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহসানের সঙ্গে মিলে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এরমধ্যে ৩৫টি প্রজাতির সাপ বিষধর, আর ৮৫টি প্রজাতি বিষধর নয়।
এই বিষধরের তালিকায় আছে পিট ভাইপারও। তবে পিট ভাইপারের কামড়ে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর রেকর্ড পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম ফরিদ আহসান।