গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো, তোপের মুখে যুক্তরাষ্ট্র

コメント · 27 ビュー

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) উত্থাপন করা ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির এক

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) উত্থাপন করা ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে ৬ বারের মতো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভোটো দিল দেশটি।  এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ওয়াশিংটন।  খবর ডেইলি সাবাহ’র। 

বৃহস্পতিবারের  বৈঠকে উত্থাপিত সর্বশেষ প্রস্তাবটির খসড়ায় গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছিল। সেই সঙ্গে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলকে সব ধরণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং ত্রাণ সরবরাহ করতে দেওয়ার কথাও বলা ছিল। এর বিপরীতে খসড়া প্রস্তাবটিতে গাজায় জিম্মি অবস্থায় থাকা ইসরাইলিদের অবিলম্বে সম্মানজনক মুক্তির শর্তও ছিল।

স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচিত ১০ সদস্যদেশ এ খসড়া প্রস্তাব তুলেছিল। স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়েছে। বাকি ১৪ সদস্য দেশ খসড়া প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এ ভোটোকে কূটনীতিক, ত্রাণ সংস্থা ও মানবাধিকার কর্মীরা আন্তর্জাতিক কূটনীতির বড় ধরনের ব্যর্থতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। 

 

 

 

যুক্তরাষ্ট্রের নীতি-বিষয়ক উপদেষ্টা মরগান ওর্তাগাস ভেটোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, প্রস্তাবে ‘হামাসকে নিন্দা করা হয়নি বা ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি’ এবং এটি হামাসের বর্ণনাকে বৈধতা দেওয়ার ঝুঁকি বহন করে।

কিন্তু তার এ কথায় নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি।

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোকে ‘দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক’ আখ্যায়িত করে বলেন, এটি গাজার বেসামরিক মানুষকে রক্ষা করতে ব্যর্থ করেছে, যখন জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্তকারীরা সেখানে চলমান পরিস্থিতিকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। 

তিনি বলেন, ‘সহিংসতা অচলাবস্থা তৈরি করে। যুদ্ধবিরতি ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি, জিম্মি ও বন্দিদের জীবন রক্ষা করবে।’

আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আমার বেনজামা অধিবেশন শুরু করেন ফিলিস্তিনিদের কাছে ক্ষমা চেয়ে। তিনি রুয়ান্ডা ও বসনিয়ার মতো ঐতিহাসিক ব্যর্থতার কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, ‘আমাদের ক্ষমা করবেন, কারণ বিশ্ব অধিকার নিয়ে কথা বলে কিন্তু আপনাদের ক্ষেত্রে তা অস্বীকার করে।’

বেনজামা সতর্ক করে বলেন, ‘দৃঢ় পদক্ষেপ ছাড়া নিরাপত্তা পরিষদ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে।’

পাকিস্তানের প্রতিনিধি আসিম ইফতিখার আহমদ মার্কিন ভেটোকে ‘অন্ধকার মুহূর্ত’ আখ্যায়িত করে বলেন, এটি পরিষদকে ‘অভূতপূর্ব বর্বরতা, ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ও মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ’-এর প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধা দিয়েছে।

অন্য কূটনীতিকরাও একই ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

ডেনমার্কের প্রতিনিধি বলেন, ভোট ছিল শান্তির পক্ষে একটি অবস্থান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি কেবল জরুরি নয়, বরং প্রজন্মকে যুদ্ধ, ক্ষুধা ও হতাশা থেকে রক্ষার জন্য অপরিহার্য।’

গায়ানার প্রতিনিধি গাজায় চলমান আগ্রাসনকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং জাতিসংঘ-নির্ধারিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের ফলাফলের কথা উল্লেখ করেন।

চীন ও রাশিয়াও ভেটোর সমালোচনা করেছে। রাশিয়া বলেছে, ‘কীভাবে একটি মাত্র রাষ্ট্রের ইচ্ছা পুরো পরিষদকে অচল করে দিতে পারে, তা এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে।’

コメント