ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স, সেপ্টেম্বরেই ঘোষণা

Reacties · 12 Uitzichten

গামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ??

গামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বিশ্বের শক্তিধর শিল্পোন্নত সাত দেশের (জি৭) মধ্যে ফ্রান্স হবে প্রথম দেশ, যারা এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। খবর বিবিসির।

এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে ম্যাক্রোঁ লিখেছেন, “গাজায় যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি এবং বেসামরিক জনগণকে রক্ষা করতে হবে। শান্তি সম্ভব। আমাদের এখনই যুদ্ধবিরতি, সব জিম্মির মুক্তি এবং গাজার মানুষের জন্য ব্যাপক মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।”

ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই শান্তির প্রতি আমাদের ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতির প্রতি অনুগত থেকে, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ, গাজাকে নিরাপদ ও পুনর্গঠন এবং একটি কার্যকর ও অস্তিত্বশীল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন জরুরি। সেই রাষ্ট্রকে অবশ্যই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”

ম্যাক্রোঁ এ বিষয়ে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে একটি চিঠিও পাঠান।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের ডেপুটি হুসেইন আল-শেইখ বলেন, “এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি ফ্রান্সের অঙ্গীকার এবং ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অধিকারের প্রতি সমর্থনকে প্রতিফলিত করে।”

হামাস একে “সঠিক পথে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ” হিসেবে অভিহিত করে এবং বিশ্বের সব দেশকে ফ্রান্সের অনুসরণ করতে আহ্বান জানায়।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ফ্রান্সের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, “এটি ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐকমত্যের পুনরায় নিশ্চিতকরণ।”

অপরদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কড়া ভাষায় ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে এক্সে লিখেছেন, “৭ অক্টোবরের গণহত্যার পর একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করার নামান্তর।”

তিনি আরও বলেন, “এমন একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে নয়, বরং তার জায়গা দখল করে নেবে। তারা শান্তি চায় না, তারা ইসরায়েলের ধ্বংস চায়।”

বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪০টিরও বেশি দেশ ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ যেমন স্পেন ও আয়ারল্যান্ড এর মধ্যে রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা মিত্ররা এখনও স্বীকৃতি দেয়নি।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেন, তিনি শুক্রবার ফ্রান্স ও জার্মানির নেতাদের সঙ্গে একটি জরুরি ফোন করবেন। তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা একটি অবিচ্ছেদ্য অধিকার। যুদ্ধবিরতি আমাদের সেই পথে এগিয়ে দেবে

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় যে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে, তাতে এখন পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ৫৯ হাজার ১০৬ জন মানুষ নিহত হয়েছে এবং অধিকাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, বর্তমানে গাজা সিটির প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে এবং অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে।

১০০-র বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠন গাজায় “ব্যাপক দুর্ভিক্ষ”-এর সতর্কতা দিয়েছে এবং সরকারগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেছে।

Reacties