মাদকের টাকা জোগাতে শিশুপুত্রকে বিক্রি বাবার, মায়ের ‘সম্মতি’

মন্তব্য · 57 ভিউ

শরীয়তপুরে মাদকের টাকা জোগাতে দেড় মাস বয়সী নিজের শিশুপুত্রকে প্রতিবেশীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাবা ইব্র

শরীয়তপুরে মাদকের টাকা জোগাতে দেড় মাস বয়সী নিজের শিশুপুত্রকে প্রতিবেশীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাবা ইব্রাহীম হাওলাদার। সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে সদর উপজেলার চরপালং এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পরে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ রাতে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার দাদা-দাদির জিম্মায় দেয়।

ইব্রাহীম শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ফতেজঙ্গপুর গ্রামের বাসিন্দা শওকত হাওলাদারের ছেলে। পরিবার নিয়ে শহরের চরপালং এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, ইব্রাহীম মাদক বিক্রি ও সেবনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এতে পরিবারে দেনা হয়। সেই দেনা পরিশোধে তিনি ছেলেকে প্রতিবেশী ইকবাল হোসেন ও তার স্ত্রী মুক্তা আক্তারের কাছে ৩১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় একজন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে ফোন করেন। এরপর পালং মডেল থানার পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় রাতে শিশুটিকে উদ্ধার করে। আটক করা হয় ইব্রাহীম ও তার স্ত্রী শ্রাবণীকে। শিশুটির দাদা শওকত হাওলাদার ও দাদি ঝর্ণা বেগম থানায় গিয়ে মুচলেকা দিয়ে ইব্রাহীম ও শ্রাবণীকে ছাড়িয়ে নেন।

ইব্রাহীম হাওলাদার বলেন, ‘আমি মাদক সেবন ও বিক্রি করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। ওই ঋণ পরিশোধের টাকা পরিবারের কাছে চেয়েছিলাম। টাকা না পেয়ে ছেলেকে বিক্রি করার জন্য স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করেছি। তার সম্মতি পেয়ে ৩১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিই।’

শিশুটির দাদা শওকত হাওলাদার বলেন, ‘একজন বাবার সন্তান মাদকসেবী হলে ওই বাবার দুঃখকষ্টের শেষ থাকে না। ওর যন্ত্রণায় আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। সে তার সন্তানকে বিক্রি করে দেবে, তা কল্পনাও করতে পারিনি। আমার নাতিকে বিক্রি করে দেওয়ার খবর প্রতিবেশীদের কাছে শুনে পুলিশের সহায়তা নিয়ে নাতিকে উদ্ধার করেছি।’

শিশুটিকে নেওয়া প্রতিবেশী ইকবাল হোসেন জানান, তার তিন কন্যাসন্তান। স্ত্রী ছেলেসন্তানের জন্য আকুতি জানাতেন। ইব্রাহীম দম্পতি তাদের ছেলেকে লালন-পালনের জন্য ইকবাল হোসেনের কাছে দিতে রাজি হলে তারা কিছু টাকা দিয়ে শিশুটিকে নেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে পুলিশের হাতে শিশুটিকে তুলে দেন বলে জানান।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘একটি শিশুকে তার বাবা-মা বিক্রি করে দিয়েছে—জরুরি সেবা ৯৯৯-এ এমন অভিযোগ পাই। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার বাবা-মাকে থানায় নিয়ে আসি। পরে তাদের অভিভাবকেরা মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়েছেন। শিশুর বাবা মাদকাসক্ত। কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় মামলা করা হয়নি।’

মন্তব্য
অনুসন্ধান করুন