শিশুর দেরিতে কথা বলার কারণ, কী করবেন

Reacties · 2 Uitzichten

শিশুর দেরিতে কথা বলা বাবা-মায়ের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শিশুর দেরিতে কথা বলার কারণ কী এবং এ পরিস্থিতিত?

শিশুর দেরিতে কথা বলার কারণ

 

ডা. গোপেন কুন্ডু বলেন, শিশুদের দেরিতে কথা বলার পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। কিছু রোগের কারণে অনেক শিশু দেরিতে কথা বলে। যেমন-

 

১. ডাউন সিনড্রোম: ডাউন সিনড্রোমে শিশুর শরীর তুলতুলে নরম ও মুখমণ্ডলের ধরন আলাদা থাকে। এই শিশুদের বুদ্ধি হয় না, হাঁটা, বসা, চলাফেরা করতে পারে না এবং তারা কথাও দেরিতে বলে।

২. সেরিব্রাল পালসি: জন্মের সময় কান্না করতে দেরি হওয়ার কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেন কমে যায়, মস্তিষ্ক কাজ করে না। যার ফলে হাঁটা ও বসার মতো কথা বলাও দেরিতে হয়, শিশুর বুদ্ধি কমে যায়।

৩. অটিজম: এক্ষেত্রে হাঁটতে, বসতে বা চলতে অসুবিধা নেই, কিন্তু কথা বলতে দেরি হয়। আচরণগত অসুবিধা দেখা যায়। শিশু এক জায়গায় বসে থাকে না, নিজের মতো চলে। অন্য শিশুদের সঙ্গে মেশে না, কথা বলে না, কিছু আচরণ করে যা অন্য বাচ্চারা করে না।

৪. কনজেনিটাল বা জন্মগত হাইপোথাইরয়েডিজম: জন্মের পর যেসব শিশুর জিহ্বা বড় থাকে, জিহ্বা বের করে থাকে, পেট ফোলা থাকে, হাঁটতে ও বসতে দেরি করে সেসব বাচ্চার থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সমস্যা থাকে। হরমোনজনিত সমস্যার কারণে বাচ্চা দেরিতে কথা বলে।

 

৫. জন্মগতভাবে শিশু যদি কানে কম শোনে, কাছ থেকে ডাকলেও সাড়া না দেয়, এমন শিশুদের কথা বলতে দেরি হয়।

 

৬. শিশুর জিহ্বা যদি তালুর সঙ্গে লাগানো থাকে।

 

৭. শিশুর ঠোঁট কাটা, তালু কাটা থাকলে কথা বলা দেরি হতে পারে।

 

ডা. গোপেন কুন্ডু বলেন, এগুলো ছাড়াও পরিবেশগত কিছু কারণে শিশুর কথা বলতে দেরি হয়। যেমন-

 

১. দেরিতে কথা বলা বা কথা কম বলার পেছনে মোবাইল ফোন দায়ী। এক বছর বয়সে অনেক শিশু কথা বলা শিখতে শুরু করার পর দেখা গেছে দুই বছর বয়সে এসে তা কমে যাচ্ছে। এর কারণ শিশুর ওপর মোবাইল ফোনের প্রভাব।

 

২. গ্রামের তুলনায় শহরের শিশুরা দেরিতে কথা বলে। গ্রামের শিশুরা বাবা-মাকে বেশি পাশে পায়, অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে মেশে, মোবাইল ফোন বেশি হাতে পায় না।

 

৩. শিশুর সঙ্গে বাবা-মায়ের কম কথা বলাও শিশুর দেরিতে কথা বলার কারণ। ছোট পরিবারের শিশুরাও দেরিতে কথা বলে।

৪. বাবা-মা কর্মজীবী হলে সন্তানদের কম কথা বা দেরিতে কথা বলতে দেখা যায়।

 

৫. প্রবাসী বাঙালি যারা তাদের শিশুরাও অনেকে দেরিতে কথা বলে। জন্মের পর মাল্টিপল ল্যাঙ্গুয়েজের কারণে অনেক সময় শিশু কম কথা বলে, দেরিতে কথা বলে।

 

৬. মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, ইউটিউবে মাল্টিপল ল্যাঙ্গুয়েজ শিশুদের দেরিতে কথা বলার কারণ।

 

শিশু দেরিতে কথা বলছে কি না কীভাবে বুঝবেন?

 

৬ মাসের একটি শিশু বাবলিং সাউন্ড করে।

 

১ বছরের শিশু বাবাকে বাবা ও মাকে মা বলতে শিখে।

 

২ বছরের শিশু দুইটা শব্দ একসঙ্গে করে ছোট বাক্য 'আমি খাব', 'আমি যাব' এসব বলতে পারে।

 

৩ বছরের শিশু বড় বাক্য তৈরি করে কথা বলতে পারে, ছড়া বলতে পারে।

 

ডা. গোপেন কুন্ডু বলেন, ৩ বছর বয়সের মধ্যে সব শিশু সব কথা বলতে পারবে এটা স্বাভাবিক। যদি কোনো শিশু তিন বছরের মধ্যে কথা না বলে তাহলে বুঝতে হবে তার কোথাও কোনো অসুবিধা আছে।

Reacties