বিশ্ব রেডিওথেরাপি সচেতনতা দিবস ২০২৫

הערות · 15 צפיות

(World Radiotherapy Awareness Day – WRAD)।

২০২৫ সালের এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হল- ক্যানসার চিকিৎসায় রেডিয়েশন থেরাপির গুরুত্বকে এক

(World Radiotherapy Awareness Day – WRAD)। 

 

২০২৫ সালের এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হল- ক্যানসার চিকিৎসায় রেডিয়েশন থেরাপির গুরুত্বকে এক কণ্ঠে, একসাথে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা।

 

কেন প্রয়োজন এই দিনটি?

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর কোটি কোটি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এদের অন্তত ৫০–৬০ শতাংশ রোগীর চিকিৎসার একটি অপরিহার্য অংশ হলো রেডিয়েশন থেরাপি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রেডিয়েশন থেরাপি রোগীর ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ, রোগমুক্তি, এমনকি দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

 

তবুও সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো রেডিয়েশন নিয়ে ভুল ধারণা ও ভয় বিদ্যমান। অনেকেই মনে করেন রেডিয়েশন থেরাপি মানেই গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অনিশ্চিত ফলাফল। বাস্তবে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে আজকের দিনে রেডিয়েশন থেরাপি অনেক বেশি নিরাপদ, কার্যকরী এবং রোগীবান্ধব হয়ে উঠেছে।

 

বাংলাদেশে রেডিয়েশন অনকোলজি

 

বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ নতুন ক্যান্সার রোগী শনাক্ত হয়। এদের একটি বড় অংশকেই রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। 

 

দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে অত্যাধুনিক রেডিয়েশন মেশিন (যেমন: লিনিয়ার এক্সিলারেটর, টোমোথেরাপী ইত্যাদি) ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বগুড়াসহ বড় শহরগুলোতে ক্যান্সার চিকিৎসায় রেডিয়েশন থেরাপির সুযোগ ক্রমেই বাড়ছে। তবে এখনো প্রান্তিক পর্যায়ে পর্যাপ্ত সেবা পৌঁছায়নি, যা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

 

চিকিৎসক, রোগী ও সমাজের সম্মিলিত দায়িত্ব

 

‘One Voice for Radiotherapy’ প্রতিপাদ্যের মূল বার্তাই হলো — চিকিৎসক, রোগী, পরিবার, গণমাধ্যম এবং নীতিনির্ধারকদের সমন্বয়ে এক কণ্ঠে রেডিয়েশন থেরাপির সঠিক তথ্য, সম্ভাবনা ও সাফল্যের গল্পগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরা।

 

-চিকিৎসকদের দায়িত্ব হলো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে রোগীর জন্য সঠিক ও নিরাপদ চিকিৎসা নিশ্চিত করা।

 

-রোগী ও পরিবারের দায়িত্ব হলো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পূর্ণ চিকিৎসা সম্পন্ন করা এবং ভুল ধারণা কাটিয়ে ওঠা।

 

-গণমাধ্যম ও সমাজের দায়িত্ব হলো ক্যান্সার ও রেডিয়েশন থেরাপি বিষয়ে ইতিবাচক সচেতনতা তৈরি করা।

 

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা

 

বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসাকে আরও এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন—

 

-বেশি সংখ্যক আধুনিক রেডিয়েশন মেশিন স্থাপন

 

-প্রশিক্ষিত মেডিকেল ফিজিসিস্ট ও রেডিয়েশন টেকনোলজিস্ট বৃদ্ধি

 

-রোগীদের জন্য সাশ্রয়ী চিকিৎসা ও সহায়তা কর্মসূচি চালু

 

-জনসচেতনতা বৃদ্ধি

 

 উপসংহার

 

রেডিয়েশন থেরাপি হলো ক্যান্সার চিকিৎসার একটি পরীক্ষিত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে এটি রোগীর জীবন বাঁচাতে, ব্যথা কমাতে ও জীবনের মান উন্নত করতে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। 

 

তাই ৭ই সেপ্টেম্বর, বিশ্ব রেডিওথেরাপি সচেতনতা দিবস ২০২৫-এ আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক— এক কণ্ঠে, একসাথে, রেডিয়েশন থেরাপিকে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করব।

 

লেখক: সিনিয়র কনসালট্যান্ট, রেডিয়েশন অনকোলজি, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা

הערות